জুমবাংলা ডেস্ক: সিলেটে বৃষ্টি ও উজানের ঢল অব্যাহত রয়েছে। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ১৫ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সিলেট নগরের শতাধিক পাহাড়-মহল্লায় পানি ঢুকে পড়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। এক মাসের ব্যবধানে দুইদফা বন্যায় দুর্গত এলাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
এদিকে, সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ক্রমাগত পানি বাড়ায় নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আরও ত্রাণ সহায়তার চাহিদা চাওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট জানিয়েছে, প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সুরমা নদীর পানি সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, সারি, ধলাই, লোভাছড়াসহ সীমান্ত নদীগুলোতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। লালাখালে ২৮৩, ছাতকে ২০০, সুনামগঞ্জে ১৮৫, কানাইঘাটে ১১৫, জাফলংয়ে ১১৩, জকিগঞ্জে ৮৬, শেওলায় ৬৪ ও সিলেট সদরে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর কেবল মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৬৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে নদনদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি এখন বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার, কানাইঘাট পয়েন্টে ৯৩ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বাড়ার কারণে সিলেট সিটি করপোরেশনের অন্তত ১৫টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন, দক্ষিণ সুরমায় ৪টি, কানাইঘাটে ৯টি, জকিগঞ্জে ৪টি, বিয়ানীবাজারে ৬টি, গোলাপগঞ্জে ৩টি, বিশ^নাথের দুটি, জৈন্তাপুরে ৬টি, গোয়াইনঘাটে ১০টি, কোম্পানীগঞ্জে ৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ পৌরশহর ছাড়াও সদর উপজেলা, তাহিরপুর, বিশ^ম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলার পাঁচ উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৯ লাখ টাকা নগদ বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার এলাকাও প্লাবিত হয়। এতে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। এক সপ্তাহ স্থায়ী এই বন্যায় জেলার সড়ক, মৎস, পোল্ট্রি, কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফের বন্যা স্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি ও ভোগান্তি কয়েকগুণ বাড়তে পারে। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।