রিফাত তাবাসসুম, ইউএনবি: পাহাড়ের সাথে চারিদিকে সবুজের সমারোহ, এমন স্বর্গীয় প্রশান্তিময় স্থানে কি কখনও কল্পনা করেছেন নিজেকে? এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা সিলেট থেকে। সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত সিলেটে বিভিন্ন পাহাড়, চা-বাগানসহ রয়েছে বেশকিছু পর্যটন কেন্দ্র।
চলুন জেনে নেই সিলেট ও এর আশেপাশের শীর্ষ ছয়টি পর্যটন কেন্দ্র সম্পর্কে।
রাতারগুল: বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা- রাতারগুল বা রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এটি সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। চিরসবুজ এই বন বর্ষাকালে ২০ থেকে ৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকলেও, বাকি সারা বছর পানির উচ্চতা থাকে ১০ ফুটের মতো।
কিভাবে যাবেন রাতারগুল? প্রথমে সিলেট শহর থেকে গোয়াইনঘাট যাওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে সিএনজি। ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকার মতো। গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। এরপর গোয়াইনঘাট থেকে ট্রলার ভাড়া করে ঘুরে আসতে পারবেন রাতারগুলে।
জাফলং: সীমান্ত অতিক্রম না করেই প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাওয়ার রোমাঞ্চ অনুভব করতে চান? আপনাকে সেই অসামান্য অভিজ্ঞতা দিতে পারে সিলেটের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র জাফলং।
ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলংয়ে গেলে দেখা মিলবে নদী আর পাহাড়ের অপূর্ব সম্মিলন। সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জাফলং বাসে করে যেতে সময় লাগবে ৩ থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
বিছানাকান্দি: নৌকা ভ্রমণ পছন্দ? বিছানাকান্দি আপনাকে এনে দিতে পারে অন্যরকম আত্মতৃপ্তি। খাসিয়া পর্বতের বিভিন্ন স্তর এসে এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে এখানে। খাসিয়া পর্বত থেকে নেমে আসা ঝর্ণা এখানে একটি হ্রদের সৃষ্টি করেছে যা পরবর্তীতে গিয়ে মিশে গিয়েছে পিয়াইন নদীর সাথে।
সিলেট শহর থেকে বিছানাকান্দি প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে। সিএনজি অটোরিকশাতে করে সহজেই আসা যায় এখানে। এরপরই নৌকা ভাড়া করে ভেসে বেড়াতে পারেন অনন্য সুন্দর পিয়াইন নদীতে।
লালাখাল: ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। নীল পানির এই লালাখালের পাশ দিয়েই প্রভাবিত হয়েছে সারি গোয়াইন নদী।
এখানে ভ্রমণ করতে হলে সিলেট থেকে বাসে করে প্রথমে যেতে হবে সারিঘাটে। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন নদী পাহাড় আর সবুজ ঘেরা এই বিখ্যাত পর্যটন স্থানে।
মণিপুরী রাজবাড়ি: প্রাচীন স্থাপত্যের অনুরাগী হলে আপনার ভ্রমণের তালিকায় রাখতে পারেন সিলেটের মণিপুরী রাজবাড়িকে।
উনবিংশ শতাব্দিতে নগরীর মির্জাজঙ্গলে রাজবাড়িটি নির্মাণ করেন মণিপুরী রাজ্যের তিন সহোদর রাজা চৌর্জিত সিং, মার্জিত সিং এবং গম্ভীর সিং। এটি সিলেটের অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন।
মালনীছড়া চা বাগান: অনন্য সৌন্দর্য্যে ঘেরা বিভিন্ন চা বাগান সিলেটকে দিয়েছে আলাদা পরিচয়। এসবের মধ্যে মালনীছড়া চা বাগান অন্যতম। এটি বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম ও সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা বাগান।
১৮৪৯ সালে লর্ড হার্ডসন ১৫০০ একর জায়গার ওপর এই চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়াও সিলেট ও এর আশপাশে রয়েছে আরও বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সহজেই এসব জায়গায় ঘুরে আসা যায়। তবে, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই ভালো। শুভ হোক আপনার ভ্রমণ। সূত্র: ইউএনবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।