অন্ধকারে ঘরে আলোর প্রয়োজনে কিংবা উৎসবের দিনে ঘরের শোভা বাড়াতেও মোমবাতির কোনো জুড়ি নেই। কিছু মানুষ আছে যারা খুব শৌখিন, ঘর সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে খুব পছন্দ করেন। তাদের জন্য মোম হতেই পারে ঘর সাজানোর উপকরণ। বিভিন্ন আকার ও বাহারি রঙের মোমবাতি আপনার ঘরে আনতে পারে শৈল্পিকতার ছোঁয়া। এ ছাড়া সামনেই কালীপূজা, ওইদিন ঘর সুগন্ধিতে রাখতে চাইলে জ্বালিয়ে নিতে পারেন সুগন্ধিযুক্ত মোমবাতি।
কিন্তু সব ধরনের মোমবাতি ঘরের সব জায়গায় মানায় না। এমনকি সব সুগন্ধ সব সময়ের জন্য নয়। বাড়িতে পূজা থাকলে একরকম সুগন্ধর চাহিদা থাকে আবার গল্প-আড্ডার সময় তার ধরন পাল্টায়। সাধারণ শান্ত সময়ে সেই গন্ধ আরেক রকম হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। পূজার সময় ধুনো-ধুনো গন্ধ খুব যায়, হইহই আড্ডায় ফুলেল সুবাস, সাধারণ সময়ে মৃদু যে কোনও সুগন্ধি।
এ সব নিয়ে বলার আগে, মোমবাতির ইতিহাস নিয়ে ছোট্ট করে মিষ্টি কাহিনিটি বলা যাক। তিন হাজার বছরেরও আগে মেসোপটেমিয়া ও মিশরে সুগন্ধি ব্যবহারের চল ছিল ধোঁয়ার মাধ্যমে। কাঠজাতীয় কিছু জ্বালিয়ে তার ভিতর কোনও দাহ্য সুগন্ধি বস্তু ফেলে। আবার আরেক দল ইতিহাসবিদদের মতে, এমন সুগন্ধির ব্যবহারের জনক আরব। এখনও আরবের একটি স্থানকে বলা হয় ‘সুগন্ধির ভূমি’। কেউ বলেন, মোমের মাধ্যমে ফল-ফুলের সুগন্ধির ব্যবহার প্রথম শুরু হয় ‘ফারাও’ যুগে।
সুগন্ধির চল প্রথমে রাজপ্রাসাদের মধ্যেই আটকে ছিল। পরে একটা সময়ে তা বনেদি পরিবারের ঘরে ঘরে আদর পায়। ঠাকুরবাড়ির লোকজনদের সুগন্ধি ব্যবহারের কথা সুবিদিত। বলা হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনে ধরেছিল গোলাপ আর জুঁইয়ের সুগন্ধি। তো, সে কথায় কাজ নেই। চলুন, সুগন্ধি মোমবাতির মায়া ধরানো যাক আপনাকে।
গ্লাস জার মোমবাতি: সাদা, নীল, কমলা, লাল, হালকা সবুজ, গাঢ় বেগুনি, আকাশি রঙে পাওয়া যায় দোকানে। আকারেও নানা ধরনের হয়ে থাকে। গোলাকার, চারকোণা, ত্রিভূজাকৃতি, পিলারাকৃতি, তারকাকৃতি, পিরামিডকৃতি ছাড়াও নানান ফল-ফুল, জীবজন্তুর আকারের নকশা কাটা। গ্লাস জার সুগন্ধি মোমবাতি কাঁচের জারের ভেতর বাহারি রঙের মোমবাতি। যার সুগন্ধও নানা রকমের। জুঁই, গোলাপ, রজনীগন্ধা, বেল ফুল বা লেবুর গন্ধযুক্ত। সব সময় যে জ্বালিয়ে রাখা হয়, তা’ও নয়। শুধু সাজিয়ে রাখাতেই ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
জাম্বো মোমবাতি: এগুলো প্রধানত চার থেকে আট ইঞ্চি লম্বা বাহারি সুগন্ধি মোমবাতি। বিশেষ বিশেষ দিনে খাবার টেবিলে মূলত ব্যবহৃত হয়।
টব মোমবাতি: এই বাহারি সুগন্ধি মোমবাতি আবার নানা ফল-ফুল, জীবজন্তুর আকারেও হয়ে থাকে। অনেক সময় ড্রইংরুমের কৃত্রিম নীচু সিলিং থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তাতে ঘরের একটা অন্য রকমের সৌন্দর্য তৈরি হয়। বাড়ির ব্যালকনিতেও ঝুলিয়ে রাখলে সৌন্দর্য বাড়ে আপনার বারান্দার।
ইলেকট্রোপ্লেটিং গ্লাস মোমবাতি: ধাতব-কাঁচের তৈরি। গায়ে আলো পড়লে এর দ্যূতি যেন ঠিকরে বেরোয়! বসার ঘরে রাখলে অতীব সুন্দর দেখায় ঘর।
টি-লাইট মোমবাতি: খাবার টেবিল সাজানোর জন্য।
এলইডি-ক্যান্ডেল: বাড়িতে সঙ্গীর সঙ্গে মৃদু আলোতে রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর্বের জন্য আদর্শ এই বাহারি সুগন্ধি মোমবাতি।
ক্যারিবিয়ান ড্রিম মোমবাতি: এটিও এক ধরনের বাহারি সুগন্ধি মোমবাতি। বসার ঘর, খাওয়ার টেবিল, এমনকি শোবার ঘরেও খাটের পাশে ছোট টেবিলে সাজিয়ে রাখলে চমকপ্রদ দেখতে লাগে।
জেলি মোমবাতি: এই ‘ডেকোরেটিভ’ সুগন্ধি মোমবাতি একটা সুন্দর দেখতে ছোট আধারে রঙিন জেলি আকারে থাকে। ফ্রুট জেলি মোমবাতির আধার বিভিন্ন ফলের আকৃতির ও সেই ফলের সুগন্ধি হয়ে থাকে সাধারণত।
গ্লাস পারফিউম মোমবাতি: সুদৃশ্য কাঁচের আঁধারে বিভিন্ন পারফিউম ও নানা রকমের আতরের সুগন্ধিযুক্ত মোমবাতি। সাধারণ থেকে বিশেষ, নানা মানের হয়। বসার ঘরের পাশাপাশি শোবার ঘরেও সাজিয়ে রাখা হয়।
স্টিল সুগন্ধী মোমবাতি: সুদৃশ্য ধাতব আধারের সুগন্ধি মোমবাতি। বসার ঘর থেকে শোবার ঘর, বাড়ির সব জায়গায় সাজিয়ে রাখা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।