জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। কিংবদন্তি সুচিত্রা সেন-এর নামে পুনরায় হলটির নামকরণের দাবি উঠছে।
Table of Contents
নামফলক উন্মোচন ও পরিবর্তিত নাম
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে তিনটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল আউয়াল মিয়া নতুন নামফলক উন্মোচন করেন। শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের নতুন নাম রাখা হয়েছে বিজয় ২৪ ছাত্রাবাস, বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তিত হয়েছে আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) ছাত্রীনিবাস হিসেবে এবং সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে জুলাই ৩৬ ছাত্রীনিবাস।
অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, হল সুপার, সহকারী সুপার ও ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট হল সুপাররা। সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন নামফলক তৈরি ও উদ্বোধন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।
সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন ঘিরে সমালোচনা
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন-এর নামাঙ্কিত ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্ত এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা। তাকে নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। তার নামে ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তনের তীব্র নিন্দা জানাই।”
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, “তিনি রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিত্ব নন, বরং আবেগ ও ভালোবাসার মানুষ। তার নাম মুছে দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও নাম পুনর্বহালের দাবি করি।”
কলেজ প্রশাসনের বক্তব্য
অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুল আউয়াল মিয়া জানান, “জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।”
সুচিত্রা সেনের পৈতৃক ইতিহাস
সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি পাবনা জেলা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে। এখানে তিনি শৈশব ও কৈশোর কাটিয়েছেন। ১৯৪৭ সালে বিয়ের পর তিনি কলকাতায় চলে যান। দীর্ঘ সময় দখলে থাকা এই বাড়ি ২০১৪ সালে দখলমুক্ত হয় এবং সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা।
সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন-এর স্মৃতি ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বহু মানুষ এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। প্রশাসনের যুক্তি থাকলেও, ভক্তদের আবেগকে উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। সুচিত্রা সেন-এর নামে ছাত্রীনিবাসটির নাম পুনর্বহালের দাবি দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
FAQs
প্রশ্ন ১: সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নতুন নাম কী?
উত্তর: পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নতুন নাম রাখা হয়েছে “জুলাই ৩৬ ছাত্রীনিবাস”।
প্রশ্ন ২: কেন সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে?
উত্তর: কলেজ কর্তৃপক্ষের মতে, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৩: সুচিত্রা সেন কে ছিলেন?
উত্তর: সুচিত্রা সেন ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা। তার জন্ম ও শৈশব পাবনায় কাটলেও তিনি পরবর্তীতে কলকাতায় বাস করেন এবং অভিনয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
প্রশ্ন ৪: সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তনে কারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন?
উত্তর: সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদ, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদসহ অসংখ্য ভক্ত ও সাংস্কৃতিক সংগঠক নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রশ্ন ৫: সুচিত্রা সেন-এর পৈতৃক বাড়িটি এখন কী অবস্থায় রয়েছে?
উত্তর: পাবনা জেলা শহরের গোপালপুর মহল্লায় অবস্থিত সুচিত্রা সেন-এর পৈতৃক বাড়িটি বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে এবং সেখানে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।