জুমবাংলা ডেস্ক : মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় অবস্থিত বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি ও ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটেবাড়ি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। কবির বাড়ির একটি ঘরে একাধিক ছবি, বই ও আসবাব ভাঙচুর করে ফেলে দিয়ে, ওই ঘরে ওএমএসের চাল মজুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা যায়, অভিযুক্ত ওই বিএনপি নেতার নাম সোহেল হাওলাদার। তিনি বিএনপির ডাসার উপজেলা কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি একই উপজেলার কাজীবাকাই এলাকায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কালকিনি উপজেলা ভেঙ্গে নব গঠিত ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় মৌজায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৭ একর ১৫ শতাংশ পৈতৃক জমি রয়েছে। এসব জমির মধ্যে ২ একর ৯৭ শতাংশ জমি সরকারের খাসজমি হিসেবে রেকর্ড। গত শনিবার দুপুরে লেখকের পৈতৃক ভিটার একটি টিনশেড ঘরের (সুনীল স্মৃতি পাঠাগার) তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ও তাঁর লোকজন। তাঁরা লেখকের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, বই, আসবাব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ একাধিক ছবি ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া লেখকের বাড়ির সামনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক লাগানো একটি সাইনবোর্ডও ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর তাঁরা ওই ঘরে ওএমএসের প্রায় এক ট্রাক চাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন।
বর্তমানে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পদ শূন্য থাকায় এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনির ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘সোহেল হাওলাদার নামের বিএনপির এক নেতা লেখকের ঘর দখলে নিয়ে ওএমএসের ডিলারের চাল রেখেছিলেন। আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তিনি ওই চাল সরিয়ে ফেলেছেন। ওই দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লেখকের পৈতৃক ভিটা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই সোহেল হাওলাদার লোকজন নিয়ে লেখকের জমি তাঁর নিজের বলে দাবি করেন। রাজনৈতিক পরিবেশ পরিবর্তন হওয়ায় এখন ভয়ে গ্রামের কেউ কথা বলছেন না। আর এই সুযোগে সোহেল তাঁর লোকজন নিয়ে এখানকার টিনশেড ঘরের তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন।বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই জানে। কিন্তু গত কার্যত বাড়ি উদ্ধারে তেমন কোন উদ্যোগ নিতে এখনো দেখা যায়নি।’
তবে, এ বিষয়ে জানতে সোহেল হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কল ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ সম্পর্কে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশীদ খান বলেন, ‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটেবাড়িতে থাকা একটি টিনশেড লাইব্রেরী ঘরের তালা ভেঙে এক ব্যক্তি দখলে নেওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও এসি ল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি ও ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের মাদারীপুর মহকুমার রাজৈরের আমগ্রামের মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি তৎকালীন মাদারীপুর মহকুমার কালকিনির পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর কলকাতায় মারা যান তিনি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।