আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যখন জেটপ্যাক পিঠে বেঁধে বাতাসের মধ্য দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে উড়তে থাকবেন, তখন আপনার অনুভূতি হবে একজন সুপারহিরোর মতোই। মনে হবে, আপনি তাদের মতো উড়তে পারছেন। কথাগুলো বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত হেলিকপ্টার পাইলট লেহ কৌটেস।
তিনি বলেন, এ এক অবিশ্বাস্য অনুভব। আপনার মনে হবে যেন আপনি সত্যিই উড়তে পারছেন। যদিও শুরুতে এটির ব্যবহার বেশ কঠিন।
তাহলে এই অদ্ভুত অনুভূতির জেটপ্যাক জিনিসটি কী? যা দিনে দিনে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। এমন প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে। আসলে এটি একটি জেট-প্রচালন ডিভাইস। ব্যাকপ্যাকের মতো যা পিঠে বেঁধে লোকজন উড়াল দিতে পারেন। ঝড়ো গতিতে আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়াতে আর কোনো বাধা থাকবে না। খবর বিবিসির।
জেটপ্যাক প্রযুক্তি প্রথম মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে ১৯৬৫ সালের দিকে। তখন জেমস বন্ডের চলচ্চিত্র থানডারবল এমন একটি ধারণা দিয়েছিল। এতে অতিদক্ষ গুপ্তচর বা সুপার স্পাই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত সিয়ান কোনারি।
ফরাসি শ্যাটো বা কাছারির ছাদের ওপরি দিয়ে তাকে যখন এক বন্দুকধারী তাড়া করছিল, তখন পিঠে একটি জেটপ্যাক বেঁধে উড়াল দিয়ে পালিয়ে যান এই সুপারহিরো।
চলচ্চিত্রের নাটকীয়তা থেকে জেটপ্যাকের ধারণা আসলেও পঞ্চাশের দশকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য ‘ম্যান রকেট’ বানিয়েছিল মহাকাশ কোম্পানি বেল-ট্যাক্সট্রন।
যদিও ম্যান-রকেট ব্যবহারকে বিপজ্জনকে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেমস বন্ড সিরিজের সিক্রেট এজেন্ট ০০৭ চলচ্চিত্রে দর্শকদের তাক লাগাতে এই কৌশল কাজে লাগানো হয়েছে।
৬৫ বছর পর জেটপ্যাক প্রযুক্তি আরও উন্নত হয়েছে। এখন বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এই সজ্জার ব্যবহারের পরীক্ষা চলছে। যেমন, জরুরি অবস্থায় উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় কিংবা প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজনে এই কৌশল কাজে লাগানো হচ্ছে।
গত মাসে একটি নাটকীয় ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রিটিশ কমান্ডো বাহিনী রয়েল মেরিন একটি জেটপ্যাকের পরীক্ষা চালাচ্ছে। যাতে অভিযানের সময় শত্রু জাহাজে সহজেই আরোহণ সম্ভব হয়, তাতে সহায়তায় এই কৌশল কাজে লাগাতে চাচ্ছে ব্রিটিশ নৌবাহিনী। এতে হেলিকপ্টার থেকে রশি ঝুলিয়ে নিচে অবতরণের দরকার পড়বে না আর।
তবে এই পদ্ধতিকে বিনোদনের কাজে ব্যবহার নিয়ে কোনো বলতে দেখা যায়নি। হয়তো ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েই এই খাতে তা আলোচনার বাইরে রাখা হয়েছে।
নিউইয়র্কের সিরাকুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের যান্ত্রিক ও মহাকাশ প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেনজামিন আকিহ বলেন, আমি মনে করি, বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। পরে বিনোদনের জন্য কাজে লাগানোর কথা ভাবা যাবে।
তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপন, চিকিৎসা ও উদ্ধারকর্মীরাসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেটপ্যাক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিষয়টির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



