আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একেবারে শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিরোধ দেখা দিলেও রক্ষণশীল বিচারপতিদের সমর্থন আশা করছেন ট্রাম্প৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব কয়েক দশক পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে৷ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সেই সুযোগের চূড়ান্ত সদ্ব্যবহার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন৷ বিশেষ করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সংশয় বা বিরোধ দেখা দিলে তাঁর এই সিদ্ধান্তের ‘সুফল’ পাবার আশা করছেন তিনি৷
অ্যামেরিকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কার্যকালের কোনো মেয়াদ নেই৷ আজীবন কাজ করে যেতে পারেন তাঁরা৷ ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর একাধিক পদ খালি হওয়ায় পছন্দের প্রার্থী বসিয়ে চলেছেন৷ রাজনৈতিক ফায়দা তোলার পাশাপাশি আদর্শগত দিক থেকেও চরম রক্ষণশীল, গোঁড়া ধর্মপ্রাণ বিচারপতিদের সংখ্যা বাড়িয়ে নিজের রক্ষণশীল ভোটারদেরও সমর্থন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন তিনি৷ প্রার্থী হিসেবে তাঁদের বয়স যথেষ্ট কম হওয়ায় বহুকাল তাঁরা সেই পদে আসীন থাকবেন এবং রক্ষণশীল অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ উল্লেখ্য, বিচারপতি রুথ বেডার গিন্সবার্গের মৃত্যুর পর উদারপন্থি শিবির দুর্বল হয়ে পড়েছে৷
৩রা নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এমি কোনি ব্যারেটকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির আসনে বসাতে জোরালো প্রচেষ্টা শুরু করেছেন ট্রাম্প৷ সেই প্রচেষ্টা সফল হলে ট্রাম্পের আমলে এই নিয়ে তিন জন নতুন বিচারপতি নিযুক্ত হবেন৷ সংসদের উচ্চ কক্ষ সেনেটে রিপাবলিকান দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিরোধীরা কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছে৷ নির্বাচনের ঠিক আগে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করছেন তাঁরা৷ বিরোধীদের মতে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনোনয়ন করা উচিত ছিল৷ সোমবার ব্যারেট সেনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটির সামনে হাজির হয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন৷ ডেমোক্র্যাটিক সদস্যরা বিচারপতি হিসেবে আদালতে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতার অভাবের সমালোচনা করেন৷ মঙ্গলবার ব্যারেট সেনেটারদের আরও প্রশ্নের জবাব দেবেন৷ তিনি নিজেকে পক্ষপাতহীন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন৷ ব্যারেট ও দক্ষিণপন্থি গোঁড়া ধর্মীয় শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷
নির্বাচনের আগে ব্যারেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হলে শুধু আদর্শগত প্রশ্নে রক্ষণশীলদের পাল্লাভারি হবে না, নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সংঘাত দেখা দিলে রিপাবলিকান দল সুপ্রিম কোর্টে বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বিচারপতি নিযুক্ত হলেও ব্যারেট যাতে নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত কোনো রায়ে অংশ না নেন, ডেমোক্র্যাট দলের এক সেনেটার এমন অঙ্গীকার আদায় করতে চাইছেন৷ ব্যারেট অবশ্য এমন কোনো আশ্বাস দেন নি৷
ডেমোক্র্যাটিক দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসও ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সোমবারের শুনানিতে যোগ দেন৷ তিনি মনে করিয়ে দেন যে, সুপ্রিম কোর্ট ন্যায্য রায়ের শেষ সুযোগ করে দেয়৷ তাই স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি ভোটাধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, গর্ভপাতের অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও সেখানে বিবেচিত হয়৷
সেনেটের কমিটির কাজ ঠিকমতো চললে আগামী বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ভোটাভুটি হবে৷ তারপর ২৬শে অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যারেট সেনেটারদের ছাড়পত্র পেতে পারেন৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।