জুমবাংলা ডেস্ক : ছেলে হয়ে জন্মালেও শৈশব থেকে সুবল শীলের ইচ্ছে ছিল মেয়েদের মতোই। তবে তার মনে ছোট থেকে প্রশ্ন জাগতো সে আসলে কে? ছেলে নাকি মেয়ে। কারণ মেয়ে সাজতে তার খুব ইচ্ছে হতো। বড় হয়ে নিজের সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়ে অপারেশনের মাধ্যমে নিজেকে পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত করেন। সুবল শীল থেকে রূপান্তরিত হয়ে নিজের নাম রাখেন মেঘা শর্মা। এরপর রাজধানী ঢাকা থেকে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জের নিজ বাড়ি আসলে তাকে এক নজর দেখার জন্য নারী পুরুষের ঢল নেমেছে।
পীরগঞ্জ উপজেলার থুমনিয়া নাপিতাপাড়া গ্রামের এক নরসুন্দর পরিবারে ছেলে হয়ে জন্ম নেয় মেঘা শর্মা। পিতা মাতা নাম রাখেন সুবল শীল। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে বড়। ছোট বেলা থেকেই তার আচার আচরণ ছিল মেয়েদের মতো। মেয়েদের মতো সাজ পোশাক পরতে এবং তাদের সাথে খেলা করতে ভালোবাসতো সে। সেই ইচ্ছা শক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে বড় হয়ে গত বছর অপারেশনের মাধ্যমে তিনি নারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। সুবল নাম বদলিয়ে নিজের নাম রেখেছেন মেঘা শর্মা। নিজেকে পরিচয় দিচ্ছে একজন নারী হিসেবে। কাজ করতে চান রূপান্তরিতদের নিয়ে।
মেঘা জানায়, ছোট থেকেই মেয়ের সাজে সাজতো সে। বাড়ির লোকজন বাধা দিতো। তখন তার মনে হতো সে ছেলে না মেয়ে। স্কুল-কলেজে ছাত্রদের সারিতে বসতে ইতস্তত বোধ করতেন। মনের মধ্যে সব সময় মেয়ে হওয়ার ইচ্ছা তাকে তাড়া করতো। এক পর্যায়ে তার মধ্যে নারী সত্ত্বার আবির্ভাব ঘটে। তাই সব কিছু ছাপিয়ে গত বছর ভারতে গিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে রূপান্তরিত নারী হয়েছেন তিনি।
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ এস সি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনার পাশাপাশি এখন একটি কোম্পানিতে চাকরিও করছেন মেঘা। তার পরিবার তাকে মেনে নিয়েছে। এয়ার হেস্টেজ বা মডেল হওয়ার স্বপ্নও রয়েছে তার। এছাড়াও রুপান্তরিতদের নিয়ে কাজ করবেন বলেও জানান মেঘা।
রূপান্তরিত নারী হিসেবে কয়েক দিন আগে প্রথম বাড়িতে আসায় তাকে দেখতে নারী-পুরুষের ঢল নেমেছে নাপিতপাড়ায়। তাকে নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসির মাঝে। মেঘার বাবা জগেস শীল জানান, তার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মেঘা বড়। সে এখন মেয়ে হয়ে যাওয়ায় এখন তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের পিতা। মেঘার ইচ্ছাকে তারা মেনে নিয়েছেন।
প্রতিবেশী গৃহবধূ শান্তনা শর্মা জানান, মেঘা ছেলেদের সাথে কম মিশতো। মেয়েদের সাথেই বেশী চলাফেরা করতো। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ নিমাই জানান, মেঘা সম্পর্কে তার নাতি ছিল। এখন নাতনি। সে প্রথম বাড়িতে আসায় তাকে দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জব্বার বলেন, যারা ছেলে এবং মেয়ের মাঝামাঝি আবস্থায় থাকে তাদের অপারেশনের মাধ্যেম এটা করা সম্ভব। এখন দেশেও এ ধরনের অপারেশন হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।