সাধারণত আমরা খুব স্বাভাবিক বলে ধরে নিই। বলি, আলো সূর্য দেবে না তো কে দেবে? সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকত না। প্রায় সাড়ে চার শ কোটি বছর ধরে সূর্য জ্বলছে। কিন্তু এটা ঠিক কাঠ পোড়ানোর মতো নয়। সূর্যের মহাকর্ষ বল (গ্র্যাভিটি) তার সব ভর ভেতরের দিকে টেনে রাখছে। ফলে সৃষ্ট প্রচণ্ড চাপ ও তাপ হাইড্রোজেন পরমাণুগুলোকে একত্র করে পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটায়।
অনেকটা নিউক্লিয়ার বোমার মতোই। এখানে সৃষ্ট তাপ থেকে ইনফ্রারেড রশ্মি, আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ও দৃশ্যমান আলোকরশ্মিসহ আরও অনেক ধরনের আলোক রশ্মি বের হয়। মাইক্রো ওয়েভ, রেডিও ওয়েভ, এক্স-রে প্রভৃতিও সূর্য থেকে আসে। কিন্তু সূর্যের কেন্দ্রের এই পারমাণবিক বিক্রিয়া আমাদের দৃশ্যমান সূর্যের আলো বিকিরণে খুব বেশি অবদান রাখে না। মূল আলো আসে উত্ত্তপ্ত বহিরাবরণ থেকেই।
একে বলা হয় ‘ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশন’। সূর্যের কেন্দ্রে যে শক্তি সৃষ্টি হয়, তা মূলত তাপ ও উচ্চশক্তিসমৃদ্ধ ফোটন। কিন্তু সূর্যের বহিরাবরণে আসার আগেই বেশির ভাগ ফোটন শোষিত হয়ে যায়। সূর্যের কেন্দ্রের পারমাণবিক বিক্রিয়ার কারণে এর বাইরের দিকের গ্যাস (প্লাজমা) খুব বেশি তপ্ত থাকে। এটাই সূর্যের আলো বিকিরণের মূল উত্স। আমাদের বাসায় বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্ট তপ্ত হয়ে যেমন আলো ছড়ায়, ঠিক তেমনি সূর্যের বহিরাবরণের তপ্ত গ্যাস থেকে আলো আসে।
যদি সূর্যের কেন্দ্রের পারমাণবিক বিক্রিয়ায় সৃষ্ট আলোকরশ্মি সূর্যের আলোর প্রধান অংশ হতো, তাহলে আমরা প্রধানত পেতাম গামা রশ্মি, এক্স রে প্রভৃতি। সেখানে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি বা ইনফ্রারেড রশ্মি কমই থাকত। যদি সূর্যের আলোয় গামা রশ্মি বা এক্স-রের মতো উচ্চশক্তিসম্পন্ন আলোকরশ্মি বেশি থাকত, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকাই কঠিন হতো।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel