১৯২১ সালের দিকে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিদ আর্থার এডিংটন বললেন, প্রচণ্ড চাপে কোনো হাইড্রোজেন পরমাণুর প্রোটন আরেকটি হাইড্রোজেনের প্রোটনের সঙ্গে মিলিত হয়ে পরস্পরের সঙ্গে আটকে যায়। এভাবে তৈরি হয় হিলিয়াম পরমাণু। আর আইনস্টাইনের বিখ্যাত ওই সমীকরণ ব্যবহার করে হিসেব কষে দেখালেন, এভাবে বিপুল শক্তি বেরিয়ে আসে। একে বলা হয় নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া। সূর্যের বুকেও এভাবে নিউক্লিয়ার ফিউশনে শক্তি উৎপন্ন হচ্ছে বলে দাবি করলেন এডিংটন।
কিন্তু অন্য বিজ্ঞানীদের কাছে সমালোচনার শিকার হন এডিংটন। কারণ প্রোটনদের এরকম জোড়া লাগার জন্য যে পরিমাণ তাপমাত্রা দরকার, সূর্যের মতো কোনো নক্ষত্রে তা নেই বলে মনে করতেন সে যুগের অন্য বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এডিংটনের কথাটাই শেষপর্যন্ত সঠিক বলে প্রমাণিত হয়।
এভাবেই সূর্যের জ্বালানি কয়লার জায়গা দখল করে নিল নিউক্লিয়ার ফিউশন। বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেছেন, সূর্যে প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ মিলিয়ন টন হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হচ্ছে হিলিয়ামে। তার মধ্যে ৪ মিলিয়ন টন ভর হারিয়ে যাচ্ছে। মানে সূর্য প্রতি সেকেন্ডে এই ৪০ লাখ টন ভর হারাচ্ছে। আর এই হারিয়ে যাওয়ার ভর আইনস্টাইনের সূত্র অনুযায়ী রূপান্তরিত হচ্ছে শক্তিতে। তাতে তৈরি হচ্ছে বিপুল তাপ, শক্তি ও আলো। এভাবে প্রতি সেকেন্ডে ৩.৮৪৬×১০২৬ ওয়াট শক্তি তৈরি হচ্ছে সূর্যের বুকে।
এই তাপ, শক্তি ও আলোর পাশাপাশি উপজাত হিসেবে তৈরি হচ্ছে অদ্ভুতুড়ে একটা কণা। সেই কণার নাম নিউট্রিনো। এটি সূর্যে তৈরি হচ্ছে, কিন্তু মহাকাশে ছুটে যাওয়ার সময় ম্যাজিকের মতো নিজের রূপ পালটে ফেলছে। সূর্যের নিজের দেহ আলোর উপজাত হিসেবে পরিণত করার কারণে তৈরি হচ্ছে এই কণাটি। আমাদের মাথার ভেতর দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ২০ ট্রিলিয়ন নিউট্রিনো ছুটে যাচ্ছে। কিন্তু কিচ্ছুটি টের পাচ্ছি না আমরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।