জুমবাংলা ডেস্ক : দুর্নীতি-লুটপাট, ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে অভিযুক্ত বিতর্কিত সেই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকার এবার লাপাত্তা হয়েছেন। তার কোনো খবর জানা নেই উপজেলা প্রশাসনের। এমনকি তাকে একাধিক বার ফোন ও ইমেইলে নোটিশ করেও কোনো উত্তর পাননি বলেও জানান ইউএনও। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বদলির আদেশ পাওয়ার পর তিন দিনের ছুটি নিয়ে আর অফিসে আসেননি তিনি।
পিআই নুরুন্নবীর বিষয়ে কিছুই জানা নেই জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইদ্রীস আলীর। তিনি বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তিন দিনের ছুটি নেন পিআইও। আমি বিষয়টি আন অফিশিয়ালি জানতে পারি। এ ছাড়া তার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
এদিকে পিআইও নুরুন্নবীর লাগামহীন অনিয়ম, দুর্নীতি-লুটপাট ও ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে কালের কণ্ঠ ও যমুনা টেলিভিশন। সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর সেই পিআইওর বদলির আদেশ দেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। তাকে আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় যোগদান করতে বলা হয়। অন্যথায় ১৬ অক্টোবরের পর তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
ত্রাণ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন-২) লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত বদলির আদেশ পাওয়ার পর তিন দিনের ছুটি নেন পিআইও। এরপর থেকেই বদলি স্থগিত করতে বিভিন্ন মহলে তদবির চালাচ্ছেন তিনি। এখনো তিনি ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে বদলি ঠেকানোর জন্য তদবির অব্যাহত রেখেছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী কোনো উপজেলায় বদলি চেয়ে মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন বলে তার এক ঘনিষ্ঠজন জানান। তদবিরে ব্যর্থ হলে শ্রম আদালতে বদলি আদেশের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দাখিলের চেষ্টা করতে পারে বলে গুণঞ্জন চলছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের প্রলোভন দেখিয়ে সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে আশপাশের জেলায় বদলির তদবির করছেন। তবে তিনি ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার ফোন রিসিভ করেন না বলে জানান অনেকে।
গত ২ অক্টোবর তার তিন দিনের ছুটি শেষ হলেও কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন পিআইও। এমনকি এ উপজেলায় নতুন পিআইও মোশাররফ হোসেন যোগদান করলেও তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে অনেকটা দায়িত্ব ছাড়াই অফিস করছেন নতুন এ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে গত ৫ অক্টোবর পিস্তুলের ভয় দেখিয়ে ১৪টি প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর নেয় পিআইও শিরোনামে কালের কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হলে তড়িঘড়ি করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। সেই কমিটিতে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি শেখ মামুন-উর-রশিদ ও যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশসহ গণমাধ্যম কর্মীদের বাদী করা হয়।
গত ৬ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর কবীর সৈকতের নেতৃত্বে এ তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তদন্ত কার্যক্রমে অভিযুক্ত সেই পিআইও নুরুন্নবী উপস্থিত ছিলেন না। তাকে একাধিক বার ফোন ও ই-মেইলে নোটিশ দিয়েও উত্তর পায়নি তদন্ত কমিটি। তবে পিআইওর বিরুদ্ধে ওঠা না অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোলেমান আলী বলেন, গত ২৮ তারিখ তিনি (পিআইও) ব্যাক পেইনের চিকিৎসার কথা বলে তিনদিনের ছুটি নিয়েছেন। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে আসেননি। তাকে একাধিক বার ফোন ও ইমেইল করেও কোনো উত্তর পাইনি। তিনি কোথায় আছে সেটা আমার জানা নেই। সূত্র : কালের কন্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।