বিনোদন ডেস্ক: ‘পরাণ’ জ্বরে এখনও ভুগছে দর্শক, তবে নতুন করে কাঁপার কারণ হচ্ছে ‘হাওয়া’। দিন যতো গড়াচ্ছে, বাড়ছে ততো গতি। মেজবাউর রহমান সুমনের এই ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে ২৯ জুলাই।
এরমধ্যে গান সুপারহিট। প্রশংসিত ট্রেলার-পোস্টার। দেশের অধিকাংশ মাল্টিপ্লেক্সে ছবিটির আগাম টিকিটও শেষ প্রায়! এই পর্যায়ে নির্মাতা জানালেন তার ভেতর ‘হাওয়া’ জন্মের গল্প।
সুমন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে আমি একদিন গুলশানে এক ওষুধের দোকানে যাই। অষুধ কিনবো এমন সময় কয়েকজন বেদেনী আমাকে এসে ঘিরে ফেলে! টাকা চায়। তাদের হাতে ছোট ছোট বাক্স। অনুমান করতে পারি ওগুলোতে সাপ। আমি আসলে তখন ঘাবড়ে যাই। কেন জানি ভয় পেয়ে যাই। ফলে ওয়ালেট খুলে টাকা যে দেবো, সেই শক্তি বা সাহসটুকুও হারাই। মুহূর্তে দৌড়ে আমি পার্কিংয়ে রাখা গাড়িতে উঠে বসি। এরপর ওরা আমার ড্রাইভিং সিটের পাশে এসে গ্লাসের কাছে দাঁড়ায়। হাত পাতে। আমি তখন ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে পাশের সিটে রাখি। ওরা ঘুরে ওপাশে গিয়ে গ্লাসের ফাঁক দিয়ে টাকাটা নিয়ে চলে যায়।’
না, ‘হাওয়া’ মোটেই এমন হরার বা ভয়ের কোনও গল্প নয়। যদিও সেদিনের ঐ ঘটনা বা ভয় থেকেই মেজবাউর রহমান সুমনের মাথায় নতুন একটা ‘হাওয়া’ ঢোকে।
সুমন বলেন, ‘‘সেদিন এই ঘটনার পর বাসায় ফিরতে ফিরকে আমি আসলে নতুন একটা ভাবনায় ডুবে যাই। ভেতরে নতুন একটা হাওয়া অনুভব করি। সেটা মোটেই ভয়ের নয়, যদিও আমি সেদিন খুব ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই ভয়টা পরক্ষণেই চাপা পড়ে যায় অন্য চিন্তায়। আমার মাথায় আসে, এই বেদেনীরা তো এভাবে মানুষকে ভয় দেখিয়ে এই অভিজাত শহরে ভিক্ষা করার কথা নয়। তারা তো সাপের খেলা দেখানোর কথা। সাপের বিষ বিক্রির কথা। কিংবা চুড়ি-ফিতা বিক্রি করার কথা। অথবা বীণ বাজানোর কথা। নৌকায় নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর কথা। অথচ তারা সেসব ছেড়ে উঠে এলো শহরে। উঠে এলো মানে, তারা আসলে বাঁচার জন্য সাপটাকে এখন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ এই সাপ তাদের প্রার্থনার বিষয় ছিলো। কারণ তারা তাদের আসল জীবনে আর টিকতে পারছে না বলেই এমনটা হচ্ছে। এই ভাবনা থেকে ‘হাওয়ার’ প্লট আসে মাথায়।’’
কিন্তু ‘হাওয়া’ তো সমুদ্রের গল্প, মূলত জেলেজীবন। অথচ বলছেন এর জন্ম বেদেনী ও ভয় থেকে। জবাবে সুমন বলেন, ‘এটা আসলে বেদেনী বা জেলের গল্পও নয়। এটা আসলে বিলীন হয়ে যাওয়ার গল্প। সেই বেদেনী প্লটটাকে ফিশিং বোটে নিয়ে যাই। ফলে গল্পের ফিলোসপিটা একই আছে। এবং জেলেজীবনের পাশাপাশি বেদেনীর গল্পটাও কিন্তু আছে।’
আর এই বেদেনী চরিত্রে দেখা যাবে দেশের অন্যতম গ্ল্যামারাস মডেল-অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে। সঙ্গে জেলে চরিত্রে দেখা যাবে চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন, সুমন আনোয়ার প্রমুখ।
গল্পটা বেদেনী ও জেলেকেন্দ্রিক। অথচ ছবির নাম ‘হাওয়া’! এর জবাবে নির্মাতা সুমন বলেন, ‘‘এই ছবিতে প্রেম আছে, তবে সেটাকে গ্লোরিফাই করিনি। উল্টো প্রেমের উদয় হতে গেলে সেটাকে চেপে ধরার চেষ্টা করেছি। এই চেপে ধরার ভেতর যে প্রেমময় হাওয়া বা উষ্ণতাটুকু রয়েছে- সেটাই আমাদের ছবি। আমরা জীবন ও সম্পর্কের ভেতরের হাওয়াটুকু ধরতে চেয়েছি। এজন্যই ছবিটির নাম রেখেছি ‘হাওয়া’।’’
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) জানা যায়, রাজধানীর শ্যামলী কমপ্লেক্স, সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেক্লাব-এ ‘হাওয়া’ মুক্তির প্রথম ৩ দিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে! আজ (মঙ্গলবার) থেকে কেরানীগঞ্জের লায়ন ও চট্টগ্রামের সুগন্ধাতেও অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলো।
ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাল (বুধবার) থেকে তারাও অগ্রিম টিকিট ছাড়ছে। তাদের সবগুলো শাখায় ‘হাওয়া’ চলবে। একই দিন অগ্রিম টিকিট ছাড়বে চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন ও সিনেমা প্যালেস।
সান কমিউনিকেশনের প্রযোজনায় ‘হাওয়া’ পরিবেশনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। এখন পর্যন্ত ২৭টি সিনেমা হল চূড়ান্ত হয়েছে। দর্শক চাহিদা থাকলেও হলের পরিবেশ ও সাউন্ড কোয়ালিটি বিবেচনা করে বড় পরিসরে প্রথম সপ্তাহে ছবিটি মুক্তি দিতে নারাজ নির্মাতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।