শাহীন রহমান, পাবনা: একটি সেতুর অভাবে গুমানী নদীর দুইপাড়ের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাতায়াত করার জন্য প্রথমে নৌকা এবং পরে বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। এতে অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয় মানুষকে।
পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গুমানী নদী। এ নদী পারাপারের সুবিধার্থে চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ও বওশা এলাকায় দু’টি ব্রীজ নির্মিত হলেও একই উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের জনগুরত্বপূর্ণ মির্জাপুর হাট এলাকায় নদীটির উপর সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে নদীর দুইপাড়ের মানুষকে প্রথমে নৌকায় ও পরে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নদীর উত্তরপাড়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজ, মাদরাসা, উচ্চ বিদ্যালয়, ব্যাংকসহ আরও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মির্জাপুরসহ নিমাইচড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং প্রাচীন ঐতিহ্যবাহি মির্জাপুর হাটও নদীর উত্তরপাড়ে অবস্থিত।
অপরদিকে নদীর দক্ষিণপাড়ে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, অষ্টমনিষা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বড় একটি বাজার, পোস্ট অফিসসহ আরও কিছু সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত দক্ষিণপাড়ের অষ্টমণিষা, হরিহরপুর, নূরনগর, ঝবঝবিয়া, শাহনগর সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষকে উত্তরপাড়ে এবং উত্তরপাড়ের মির্জাপুর, নিমাইচড়া, কুমুল্লিাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষকে দক্ষিণপাড়ে যেতে হয়।
এলাকার শিক্ষার্থীদের এ নদী পাড় হয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় তাদের খেয়া নৌকায় পারাপার হতে হয়। কিন্তু নদীতে চর পরার কারণে বর্তমান সময়ে খেয়া নৌকা নদীর দক্ষিণপাড়ে ভিড়তে পারছে না। তাই এ এলাকার মানুষকে নৌকায় মূল নদী পার হয়ে ফের হেঁটে বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে নদীর তীরে উঠতে হচ্ছে।
মির্জাপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, উপজেলা সদরে যাতায়াতসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই এ নদী পার হতে হয় আমাদের। সেতুর না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মির্জাপুর খেয়াঘাটের ভাটিতে অনেক বছর পূর্বে একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হলেও সামান্য কাজ হওয়ার পর অজ্ঞাত কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ্য, সন্তান সম্ভবা মাকে দ্রুত হাসপাতালেও নিতে পারি না আমরা। অষ্টমনিষা ও মির্জপুরের মধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ খুব জরুরি।
অষ্টমনিষা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের নদীর উত্তরপাড়ে যেতে হয়। অষ্টমনিষা ও মির্জপুরের মধ্যবর্তী গুমানী নদীতে সেতু না থাকায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে এ স্থানে অতি দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন।
নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি বলেন, মির্জাপুর একটি বড় ব্যবসা কেন্দ্র। নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদসহ অনেক গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা মির্জাপুরে অবস্থিত। পাশাপাশি নদীর অপর পার অষ্টমনিষাও একটি ইউনিয়ন সদর। এ দুই ইউনিয়নসহ আশপাশের অনেক মানুষকে এ নদী পারাপার হতে হয়। জনগুরুত্বপূর্ণ এ স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জুমবাংলাকে বলেন, মির্জাপুর-অষ্টমনিষা সেতুসহ আরও পাঁচটি সেতুর প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো আছে। ডিপিপি’র অন্তর্ভুক্ত হলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।