জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের অনলাইন ক্যাসিনোর সমন্বয়ক সেলিম প্রধানের সাঙ্গ পাঙ্গদের খোঁজে অনুসন্ধান চলছে। অনলাইনে টাকা বিনিয়োগ করে কারা ক্যাসিনো খেলতো এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। সেলিমের ক্যাসিনোর উপার্জিত টাকা আর কোথাও গচ্ছিতো আছে কি-না তারও খোঁজ চলছে।
এরই মধ্যে অনলাইন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের তথ্য মিলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম জানায়নি র্যাব। বিদেশিদের মাধ্যমে আর কোন ‘অনলাইনে ক্যাসিনো’ দেশে চলছে কি-না তার খোঁজ চালােেচ্ছ বাহিনীটি। র্যাবের একাধিক কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অনলাইনে ক্যাসিনো খেলতে একজন গ্রাহককে প্রথমে তার মোবাইলে পি-২৪ সফটওয়ার ইন্সটল করতে হতো। সেই সফটওয়ারের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বেশ কয়েকটি গেম খেলা যেত। এজন্য বিকাশ, নগদ বা মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে টাকা রিচার্জ করতে হতো। গেইমে জিতলে সেই টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত, আর হারলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়া হতো। সপ্তাহে বাংলাদেশে কয়েক কোটি টাকার জুয়া চলত অনলাইনে। সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। সফটওয়ারের মাধমে অনলাইন গেম বানিয়েছিলেন সেলিম প্রধান। নাম দিয়েছিলেন ‘প্রধান গ্রুপ’।
মঙ্গলবার দুপুরে সেলিমের বনানীর অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তার দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় বেশ কয়েকটি কম্পিউটার। এসব কম্পিউটার দিয়েই অনলাইনে ক্যাসিনো চালাতেন সেলিম প্রধান।
এর আগে সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২২ নম্বর ফ্লাইট ছাড়ার আগ মুহূর্তে সেলিকে আটক করে র্যাব। এর পর বেরিয়ে আসে তার অনলাইন ক্যাসিনোর ব্যবসার অজানা সব তথ্য।
সূত্র বলছে, এক বছর ধরে চলছিল অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসা। যেখান থেকে প্রতিমাসে নয় কোটি টাকা আসতো সেলিমের। বেশ কয়েকবছর জাপান থাকার পর কোয়িরায় চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার ধারণা নিয়ে আসেন। দেশে এসে শুরু করেন ব্যবসা।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, ‘সেলিমের ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে কোরিয়ানরা জড়িত ছিল। দেশি কেউ আর সেভাবে নেই। যারা আছে তারা খেলোয়াড়। অনলাইনে ক্যাসিনো খেলার আর কোনো সাইট আছে কি-না বা কেউ জড়িত আছে কি-না তাদের ব্যাপারে খোঁজ চলছে। ধারণা করছি, এমন আরও অনেকে থাকতে পারে। আমাদের সাইবার মনিটরিং সেলে তাদের সন্ধানে কাজ করছে।’
ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত অবৈধ টাকা আর কোথাও আছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ চলছে কিনা জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘টাকাগুলো ভার্চ্যুয়ালভাবে এসেছিল গেটওয়ের মাধ্যমে। সেই টাকা ক্যাশ করে দেশের বাইরে নিয়ে চলে গেছে। টাকাগুলো তো নিশ্চয় কোথাও না কোথাও বিনিয়োগ করেছে। তবে সেটার বেশিরভাগই বিদেশে। এটি আন্তজার্তিক প্রক্রিয়া। অনুসন্ধানে মনে হয়েছে, সেলিম তেমন কোনো টাকা দেশে বিনিয়োগ করেনি। তারপরও আমরা খোঁজ নিচ্ছি। সেলিম তো ঋণ খেলাপি। আমরা সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছি।’
বুধবার সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় দুটি মামলা করেছে র্যাব। এর মধ্যে একটি মানিলন্ডারিং অন্যটি মা দকদ্রব্য আইনে। সেলিমের গুলশানের বাসায় দুটি হরিণের চামড়া পাওয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে ছয়মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাবের অভিযানে সেলিমের বাসা থেকে ৪৮টি মদের বোতল, ২৯ লাখ নগদ টাকা, ২৩টি দেশের বৈদেশিক ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা সমমূল্যের মুদ্রা ও ১৩টি ব্যাংকের ৩২টি চেক জব্দ করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।