বিশ্বজুড়ে মানুষ যখন ঘরবন্দি তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই যেন দিনযাপনের অন্যতম সহায়ক হয়ে উঠেছে। ঘরবন্দি মানুষের নিঃসঙ্গতা অনেকাংশেই কমিয়ে দিয়েছে ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলো। আর ঘরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সক্রিয় রয়েছে তারকাসহ সর্বশ্রেণির মানুষ।
সম্প্রতি ঘরবন্দি মানুষের জন্য ফেসবুকে একটি মজার পোস্ট করেছেন সোহেল তাজ। তিনি তার পোস্টের শুরুতে জানিয়েছেন লেখাটি তাকে তার এক ভাগ্নি পাঠিয়েছেন।
পাঠকদের জন্য সোহেল তাজের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘‘আমেরিকার করোনাভাইরাস ফোন করেছিলো বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসকে। বাকীটা ইতিহাস।
বাংলাদেশের করোনা: ভাই সালাম কেমন আছেন?
আমেরিকার করোনা: তুই আর কথা কইস না, মান ইজ্জত তুই রাখলি কিছু? তোর পারফরম্যান্স দেইখা তোরে নিজের ভাই পরিচয় দিতেও লজ্জা হয়, যেখানে আমি আমেরিকান গুলারে হোয়ায় দিতেছি আর তুই!!! তোর দেশের লকডাউন পর্যন্ত তুইলা দিতেছে, ছি ছি, কি করলি তুই ভাই!!!
বাং করোনা: ভাই আমার কি দোষ? এই দেশের মানুষ নিজেরাই বড় ভাইরাস ভাই, আপনি নিজে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না ভাই। প্রথম সমস্যা হইলো ভাই এগো ভিতরে ঢুইকাতো মাংসই খুইজা পাই না, গলা থিকা পেট পর্যন্ত ধুলার স্তর ভাই, এরা নিঃশ্বাসে অক্সিজেন নেয় না ভাই, ধুলা নেয়, ভিতরের সব কাদা দিয়া মাখামাখি ভাই।
আ করোনা: তুই মাংস পাস না অন্য ভাইরাস কেমনে পায়?
বাং করোনা: ঘোড়ার আন্ডা পায় ভাই, ভিতরে ঢুইকা দেখি বড় ভাইরা সব আমারে নিয়া হাসাহাসি করতেছে?
আ করোনা: বড় ভাই কেডায় আবার?
বাং করোনা: আরে এইডস ভাই, ক্যান্সার ভাই, হাপানি ভাইরা। বাঙালির বডির মইধ্যে ঢুইকা দেহি বড় ভাইরা সব কানে ধইরা খারায় রইছে, আমারে দেইখা তারা হাসতে হাসতে কয় পুরান পাগল ভাত পায় না নতুন পাগলের আমদানি।
আ করোনা: কস কি? বাঙালির এ্যান্টিবডির এত পাওয়ার কেমনে? হালারাতো না খাইয়া থাকা জাতি!
বাং করোনা: ভাই বাঙালি জাতির মতো খাইওন্না জাতি নাই ভাই, ঘুম থিকা উইঠা এগো খাওয়া শুরু, খাইতে খাইতে ঘুমায় ভাই। কিছু না থাকলে মুড়ি নামে একটা মাল খায় ভাই যেইটার কোন স্বাদ নাই, ঘ্রান নাই, ভিটামিন নাই তাও ওগো সামনে খালি রাখবেন দেখবেন গরুর মতো চাবাইতেই থাকবো।
আ করোনা: ফালতু বুঝ দিবিনা তুই আমারে। এতো খাইলে ওগো দেশে এতো রোগ বালাই কেন? এতো হাসপাতাল কেন?
বাং করোনা: ভাই খায়তো সব ভেজাইল্লা খাওন। পোড়া তেলে ভাজা, ধুলায় ভাজা, মাছিতে হাগা, পচা জিনিস খায় ভাই। আর ফরমালিন ছাড়াতো কোন খাওয়নই নাই। ওগো এ্যান্টিবডি জন্মের পর থিকা খালি মারামারি কিলাকিলির মইধ্যে বড় হইছে ভাই। আমি ঢুইকা কিছু কইও নাই এ্যান্টিবডি আইসাই আমারে থাপড়ান শুরু করছে ভাই। ওগো এ্যান্টবডি খুব ডিস্টার্বড ভাই।
আ করোনা: কস কি? এতো ডেনজারাস জাতি…
বাং করোনা: ডেনজারাস কি কমু ভাই, এই খানে একটা ডিস্টিক আছে, নাম নিলে মামলা করবো, নাম না নেই, ওই ডিস্টিকে ভাই ছাগল রাহা নিয়া মার্ডার হইয়া যায় ভাই, লুডু খেলা নিয়া কোপাকুপি করে ভাই।
আ করোনা: খাইছেরে। এতো দেখি পুরা কোপাকুপি জাতি। আচ্ছা বুঝতে পারছি ভাই, কিন্তু তবু একটু দেখ মানে…
বাং করোনা: ভাই চেষ্টাতো কম করতাছি না, কিছু কিছু ঘটনা ঘটে এগুলো দুনিয়ার অন্য কোন করোনা ভাইর ফেইস করতে হয় নাই ভাই। ওইদিন ভাই এক করোনা ভাইরাস অনেক কষ্টে একজনের মাস্কে বসছে মাত্র, ভাইরে ভাই এমন গন্ধ মাস্কে, গন্ধেই সেই ভাইরাস ভাই মইরা গেছে।
আ করোনা: কস কি? এত গন্ধ? কেন এতো গন্ধ কেন? হালারা দাত মাজে না?
বাং করোনা: ভাই দাত রেগুলার মাজে কিনা জানি না, তয় বাসায় সবাই ভাই এক মাস্ক ব্যাবহার করে ভাই। বাপে মাস্ক পইরা বাজারে যায়, বিড়ি খাইতে খাইতে বাসায় আহে, আহার পর পোলায় হেই মাস্ক পইরা আবার গার্লফ্রেন্ডের লগে দেখা করতে যায়, আইলে মায় আবার হেই মাস্ক পইরা বইনের বাড়ী যাই, বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা ভাই, এইডা যে ছাতা বদনা না হেগো কে বুঝাইবো।
আ করোনা: ভাইরে ভাই, শুইনাই তো আমার বমি আসতেছেরে।
বাং করোনা: ভাই এগুলা কিছু না, ওইদিন এক করোনাভাইরাস একজনের মুখে মাত্র ঢুইকা আমারে কল দিছে, ২ ঘণ্টার মধ্যে সেই ভাই মারা গেল।
আ করোনা: কেন? গন্ধওয়ালা মাস্ক পরছিল?
বাং করোনা: না ভাই, এইখানে একটা নদী আছে নাম বুড়িগঙ্গা। ওই নদীর পানি দিয়া কুলকুলি করছিল ভাই।
আ করোনা: কস কি? নদীর পানি দিয়া কুলকুলি করলে আমরা মরবো কেন, আমরা কি এতোই দুর্বল ব্যাটা?
বাং করোনা: ভাই দুনিয়ার এমন কোন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস নাই যেগুলা এই নদীর পানিতে নাই। পানি না বইলা আপনি কইতে পারেন এইটা ভাইরাস আর ব্যাকটেরিয়ার জুস। সেই পানি দিয়া এই জাতি গোসল করে কুলকুলি করে ভাই। আর আপনি আমারে কন আমরা কি করতেছি? জীবনের ঝুকিতে পরছি ভাই এই দেশে আইসা।
আ করোনা: ভাইরে ভাই, এ কোন জাতি!!! ভাই তোর উপর আর কোন রাগ অভিমান নাই, তুই বাইচা আছোস ওই দেশে এই জন্যই আমি খুশি। যা অবস্থা বাঙালি থিকা তোর কোন রোগ হয় সেই চিন্তা করতাছি। যাই হোক তুই না মারতে পারোস গেছোসই যহন দেখ কয়জনরে ছড়াইতে পারোস, প্রায় ২ মাস হইলো তোরে পাডাইলাম, মাত্র ১১,০০০ লোকের গায় গেছোস, এইডাও খুব হতাশার।
বাং করোনা: ওরে ভাই এইখানেও সমস্যা, এমন বাটপারের বাটপার জাতি ভাই, টেষ্টই করে না। আমরা এখানে ভাই আছি প্রায় ২ লক্ষ্য মানুষের বডিতে। এহন টেষ্ট না করলে কেমনে আমরা স্বীকৃতি পামু ভাই। জীবনের ঝুকি নিয়া এদের মারতেও আছি কম না, কিন্তু টেষ্ট করে না তাই সংখ্যা এত কম দেখায়।
আ করোনা: এইডা কেমন কথা? টেষ্ট না করুক লক্ষ্যন দেইখাতো বোঝার কথা কার করোনা আছে কার নাই। এখন এত মোবাইল ক্যামেরা, ফেইসবুক কারো কিছু হইলেতো অন্য মানুষতো জানবো?
বাং করোনা: জানবো কেমনে ভাই? অবস্থা এমন যে এরা ধর্ষিত হইলেও স্বীকার করে কিন্তু করোনা হইলে স্বীকার করে না লজ্জায়।
আ করোনা: ওমা, কেন স্বীকার করে না কেন? এইটাতো একটা রোগ, এইটা নিয়া লজ্জার কি আছে?
বাং করোনা: কারণ ভাই আমরা আসার আগে এখানে কিছু ভন্ড হুজুর আছে যারা ধর্ম বেইচা চলে তারা এইটা ছড়াইছে যে আমরা খালি কাফের মুসরিকদের ধরি, মুসলমান বা মুমিন বান্দাদের ধরি না। আর স্বীকার করবোই কেমনে ভাই, এই দেশে করোনার ডরে মায়েরে সন্তান জঙ্গলে ফালায় দিয়া আসে, যেই ডাক্তার এগোর জন্য জীবন বাজি রাখছে সেই ডাক্তাররে ঘরে ঢুকতে দেয় না ভাই। কবর পর্যন্ত দিতে গেলে আন্দোলন করে যে করোনা হইলে কবর দেয়া যাইবো না। তাই কারো করোনা হইলে ভাবে অন্য মানুষ জানলেতো তারে এলাকা ছাড়া করবো তাই ভয়ে কয় না। বাড়ির কেউ মরলেও অন্যরা স্বীকার করে না যে করোনায় মরছে কারণ জানলে হেগো গ্রাম ছাড়া করব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।