আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্প্রতি দেশটির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে নেওয়া উদার সংস্কার ও ভিশন ২০৩০–এর মতো উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিশ্বনেতারা। তবে পাশ্চাত্য জীবনধারার প্রতি অতিমাত্রিক অনুরাগ এবং বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি।
Table of Contents
অস্ত্র চুক্তি ও বিতর্কিত সংস্কার
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রি চুক্তির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দৃঢ় করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরে ১৪৫টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যার আর্থিক মূল্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এছাড়াও, সৌদি প্রশাসন আগামী বছর থেকে ৬০০ নির্ধারিত স্থানে মদ বিক্রির অনুমোদন দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে।
গাজা ইস্যুতে সৌদি প্রশাসনের নীরবতা
গাজার উপর ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো অবস্থান না নেওয়ার কারণে সমালোচিত হয়েছে সৌদি আরবের যুবরাজের প্রশাসন। মাত্র ২৭ শব্দের একটি বিবৃতির মাধ্যমে দায়সারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটি। এমনকি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশের রাজনৈতিক স্লোগানও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘মাস্কড ইউথ মুভমেন্ট’ নামে তরুণদের প্রতিবাদ
সৌদি আরবে বিরল এক দৃশ্য হিসেবে প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের যুবরাজের বিরুদ্ধে টিকটকে শুরু হয়েছে ‘মাস্কড ইউথ মুভমেন্ট’। আন্দোলনকারীরা মুখ ঢেকে, কণ্ঠ পরিবর্তন করে এবং পরিচয় গোপন রেখে এমবিএস-এর শাসনব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করছেন।
আন্দোলনের মূল অভিযোগ
তরুণদের দাবি, সৌদি আরবের যুবরাজ নাগরিকদের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছেন, প্রশাসনে দুর্নীতি ছড়াচ্ছেন এবং উন্নয়নের নামে বিলিয়ন ডলারের বিনোদন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তারা বিশেষ করে সাম্প্রতিক কনসার্ট, নাচ-গান এবং বিনোদনমূলক ইভেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, যা তাদের মতে ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী।
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
আন্দোলনের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সৌদি আরবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সমালোচনার কারণে গ্রেফতার, কারাদণ্ড বা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার নজির রয়েছে। ফলে ‘মাস্কড ইউথ মুভমেন্ট’ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অভিনেত্রীর দুই হাতই ভেঙেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নন্দিনী চ্যাটার্জি
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান একদিকে আধুনিকায়নের রূপকার হিসেবে প্রশংসিত হলেও, অন্যদিকে তার প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে দেশের তরুণ সমাজের এক অংশ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ‘মাস্কড ইউথ মুভমেন্ট’ নামে এই আন্দোলন এখন নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে—এ কি বিদেশি ষড়যন্ত্র, নাকি সৌদি তরুণদের অন্তরের ক্ষোভ?
FAQs
সৌদি আরবের যুবরাজ কে?
সৌদি আরবের যুবরাজ হলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বর্তমানে দেশের ডি-ফ্যাক্টো শাসক এবং ভিশন ২০৩০-এর প্রধান উদ্যোক্তা।
সৌদি আরবের যুবরাজের বিরুদ্ধে কেন তরুণরা আন্দোলন করছে?
তরুণদের অভিযোগ, যুবরাজ নাগরিক স্বাধীনতা হরণ করছেন এবং ইসলামী মূল্যবোধ উপেক্ষা করে পশ্চিমা সংস্কৃতি চাপিয়ে দিচ্ছেন।
মাস্কড ইউথ মুভমেন্ট কী?
এটি একটি তরুণদের সামাজিক আন্দোলন যা টিকটকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সৌদি আরবের যুবরাজের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সৌদি আরবের যুবরাজের উদার সংস্কার কী কী?
তার সংস্কারের মধ্যে রয়েছে নারীর গাড়ি চালানোর অনুমতি, বিনোদন শিল্পে বড় বিনিয়োগ, এবং মদের বিক্রির অনুমোদনের প্রস্তুতি।
গাজা ইস্যুতে সৌদি আরবের যুবরাজের ভূমিকা কী?
যুবরাজের প্রশাসন গাজায় ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং সংহতির স্লোগানও নিষিদ্ধ করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।