জুমবাংলা ডেস্ক: শিল্প, সংস্কৃতি আর স্থাপত্যশৈলীর দেশ ফ্রান্স। বিশেষ করে এই দেশের রাজধানী প্যারিস নানা কারণে সমৃদ্ধ। দীর্ঘকাল প্যারিসের সবচেয়ে উঁচু ভবন হিসেবে‘কুমারী মেরি গির্জা’। নোত্র্-দাম এর অবস্থান ছিল। ১৮৩১ সালে এটি প্যারিসের সবচেয়ে উঁচু ভবন ছিল ভিক্তর উগোর উপন্যাস নোত্র্ দাম দ্য পারি-তে ভবনটিকে কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেওয়া হয়েছে। অভিষেককালে ফ্রান্সের রাজা ও সম্রাটদের এই গির্জাতেই শপথ পড়ানো হত।
‘নোত্র্ দাম দ্য পারি’কে সংক্ষেপে বলা হয় নোত্র্ দাম ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস শহরে অবস্থিত একটি ক্যাথেড্রাল।
আকাশছোঁয়া উচ্চতা ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য নোত্র্-দাম গির্জাটি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। এটি প্যারিস নগরী, ফ্রান্স, এমনকি সমগ্র ইউরোপের পর্যটকদের কাছে সর্বাধিক জনপ্রিয় ক্যাথেড্রাল। প্রতি বছর ২ কোটি লোক এটি দেখতে আসে এবং প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ পর্যটক গির্জার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এ গির্জায় প্রবেশের জন্য পর্যটকদের কোনরূপ দর্শনী দিতে হয় না।
এই রোমান ক্যাথলিক গির্জাটি বর্তমানে প্যারিসের মহাধর্মপালের অধীনে রয়েছে। গির্জাটি প্যারিস শহরের ৪র্থ আরোঁদিসমঁ বা প্রশাসনিক পৌরবিভাগের অভ্যন্তরে পড়েছে। ভৌগোলিকভাবে গির্জাটি প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে সেন নদীতে অবস্থিত ইল দ্য লা সিতে নামক ক্ষুদ্র একটি দ্বীপের পূর্বভাগে অবস্থিত। গির্জাটির পশ্চিমমুখী অংশটির সামনে রয়েছে উন্মুক্ত জঁ-পল চত্বর।
বিশপ মোরিস দ্য সুলির উদ্যোগে ১১৭৩ খ্রিষ্টাব্দে গির্জাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় দুইশো বছর ধরে এর নির্মাণ কাজ চলে এবং চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি ১৩৪৫ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়। এ কারণে ভবনটির নির্মাণশৈলী সবজায়গায় অভিন্ন রূপ নয়। তবে প্রধানত এটি গোথিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত একটি ভবন। পরবর্তীতে ১৮৪৪ থেকে ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত স্থপতি ভিওলে-ল্য-দুকের অধীনে ক্যাথেড্রালটিকে পুনরুদ্ধার ও সংস্কার করা হয়। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে আড়ম্বরের সাথে ভবনটির ৮৫০তম জন্মদিন পালন করা হয়।
আধুনিক ফ্রান্সের অনেক রাষ্ট্রপতির যেমন শার্ল দ্য গল, জর্জ পোঁপিদু, ফ্রঁসোয়া মিতেরঁ প্রমুখের শেষকৃত্য এই গির্জাতেই অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৯ সালের ১৫ই এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় নোত্র্ দাম গির্জাটি অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়। সে সময় প্রায় ৬০ লক্ষ ইউরো খরচ করে এই ক্যাথিড্রালের ছাদে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের কারণে গির্জার ওক গাছের কাঠে নির্মিত মোচাকৃতি চূড়া ও ছাদ সম্পূর্ণ পুড়ে ধ্বংস হয়ে নিচে পড়ে যায়। পুড়ে যাওয়া অংশগুলি ১৩শ শতকের দিকে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে ভবনের পাথরে নির্মিত সম্মুখভাগ ও মূল কাঠামোটি মোটামুটি অক্ষত আছে। ভবনের ভেতরে বহু মূল্যবান শিল্পকর্ম ছিল যেগুলির বেশিরভাগই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধ্বংসপ্রাপ্ত গির্জাকে পুনর্নিমাণের জন্য বিত্তবান ফরাসি ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি (লুই ভুইতোঁ, তোতাল, ইত্যাদি) একাধিক কোটি ইউরো অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেয় ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।