জুমবাংলা ডেস্ক : নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখা যাচ্ছে না শেয়ারবাজারে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার পর কিছুদিন শেয়ারবাজার গতিশীল হয়ে ওঠে। তবে কয়েকদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর ফের দরপতনের মুখে পড়েছে শেয়ারবাজার।
গত সপ্তাহে বাজার কিছুটা চাঙা হয়ে হয়ে ওঠে। চলতি সপ্তাহে আবার বড় দরপতনে গতিহীন হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার, ডলার সংকটের কারণে বাজার যেন দিশাহারা। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না।
বাজার স্থিতিশীল করতে কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চলতি মাসের শুরুতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য আইসিবিকে ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাজার স্থিতিশীলতার জন্য স্টাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন করা হয়েছে। কয়েক বছর আগে সংকট কাটাতে ব্যাপক প্রণোদনা দিয়েছিল সরকার। কর অবকাশ সুবিধা, প্রাথমিক শেয়ারে (আইপিও) বিশেষ কোটা, বিভিন্ন আইনকানুন শিথিল, ঋণসুবিধার মতো নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে কোনো পদক্ষেপে যেন কাজ হচ্ছে না।
এর আগে বাজার স্থিতিশীলতার জন্য প্রায় এক বছর ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। গত জানুয়ারিতে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। বাজার স্থিতিশীল হয়ে ওঠে। কয়েক সপ্তাহ পরই শেয়ারবাজার তার পুরনো চেহারায় ফিরে আসে। ভয়াবহ পতনের কবলে পড়ে। সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টে সূচক ৬ হাজারের নিচে নেমে আসে। এরপর চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুনর্গঠন করা হয়।
বর্তমান চেয়ারম্যানকে পুনর্নিয়োগসহ নতুন দুই কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগ ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য দেওয়ার খবরে বাজার এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। এত কিছুর পরও দীর্ঘমেয়াদে বাজারে এর প্রভাব নেই । উল্টো ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারী নয়, নির্দিষ্ট একটি চক্র এ প্রণোদনার সুবিধা নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) আবার বাজার বড় রকমের পতনের মুখে পড়েছে। আগের দুই দিন সূচক কমলেও হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, ‘এভাবে শেয়ারবাজার চলতে পারে না। কারও কোনো আস্থা নেই। শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের আস্থা না থাকলে স্থিতিশীল হবে কীভাবে। ১০-২০টি কোম্পানি ঘুরে সিন্ডিকেট ট্রেড হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত বাজারে যেসব অনিয়ম বা সিরিয়াল ট্রেড করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে একটি পক্ষ। তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিতে হবে। সিন্ডিকেটের সুবিধা করে দিয়েছে বাজার কর্তৃপক্ষ। কয়েকটি ছোট কোম্পানি শেয়ার নিয়ে মুনাফা করছে। বাজার নিয়ে ভালো কিছু উদ্যোগ নিতে হবে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘শেয়ারবাজারে অস্থিতিশীলতা দীর্ঘদিনের। দেশের আর্থিক খাতে যে সংকট চলছে বিশেষ করে ডলার বাজার কেন্দ্র করে তার প্রভাব। ডলার বাজার অস্থিরতার কারণে শেয়ারবাজারেও সংকট যাচ্ছে না। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে তার বেশির ভাগই টাকা নিয়ে গেছে। বাজারের কোনো উপকার হয়নি। এ ধরনের ছোট মূলধনি কোম্পানি তালিকাভুক্তি বন্ধ করতে হবে। বৃহৎ ও ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে। তবেই বাজার স্থিতিশীল হয়ে উঠবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।