পিয়ার্স মরগ্যান– বছর ষাটের এই ব্রিটিশ ক্রীড়া সাংবাদিকের সামনে বরাবরই মন খুলে কথা বলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ব্যতিক্রম হয়নি তাঁর এবারের পডকাস্ট সাক্ষাৎকার পর্বটিও। খণ্ড খণ্ড করে পিয়ার্স সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করছেন। যেখানে প্রতি পর্বেই থাকছে চমক।

শুরুতে মেসিকে নিয়ে করা রোনালদোর একটি মন্তব্য আলোচনায় এসেছে ফুটবলপ্রেমীদের সামনে। যেখানে তিনি মেসিকে আর্জেন্টিনারও ‘গ্রেটেস্ট অব অলটাইম’ মনে করেন না বলে শিরোনামে এসেছে। পরের পর্বে মার্কিন প্রসিডেন্টের সঙ্গে নিজের কিছু জায়গায় মিল খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন। সর্বশেষ সৌদি প্রো লিগকে পতুর্গালের ঘরোয়া লিগের চেয়েও এগিয়ে রেখেছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে এক নম্বরে রেখে রোনালদোর উপলব্ধি স্পেনের চেয়েও সৌদি আরবে গোল করা তাঁর কাছে কঠিন মনে হয়।
‘জানি অনেকেই সৌদি লিগ নিয়ে নানা কথা বলে, কিন্তু তারা কখনও এখানে ছিল না, কখনও এখানে খেলেওনি। তারা জানে না, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ছুটতে কেমন লাগে। আমি আবারও বলব, পর্তুগিজ লিগের চেয়ে সৌদি লিগ অনেক ভালো। ফরাসি লিগে শুধু পিএসজিই আছে (ভালো দল), প্রিমিয়ার লিগ তো অবশ্যই ভালাে। এক নম্বরে। আমি সব জায়গায় খেলেছি, তাই জানি সৌদিতে গোল করার চেয়ে স্পেনে গোল করা সহজ।’
ক্রিশ্চিয়ানো তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন স্পেনে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২০০৯ থেকে ২০১৮ মৌসুম দাপিয়ে বেরিয়েছেন। গোলও করেছেন সেখানে বেশি, ২৯২ ম্যাচে ৩১১টি। সেখানে সৌদি ক্লাব আল নাসরের হয়ে গত তিন মৌসুমে ৮২ ম্যাচে ৮৪ গোল করেছেন। ‘ইউরোপে লিগে সর্বাধিক গোল করলে গোল্ডেন বুট দেওয়া হয়, সেখানে সৌদি লিগের গোলগুলোকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে রাখা হয় না। অন্য ফুটবলারদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন, এই লিগ ভালো কিনা। আমাকে জিজ্ঞাসা করার দরকার নেই। কারণ আমি সব সবসময় এটাই বলে আসছি। এবার তারাও বলবে কতটা কঠিন এই লিগ।’
নিজের পুরোনো ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নিয়েও হতাশার কিছু কথা শুনিয়েছেন। ‘ম্যানইউর বতর্মান অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা সঠিক জায়গায় নেই। শুধু কোচ আর ফুটবলার পরিবর্তন করলেই হবে না।’
মেসির কথা উঠতেই খোঁচা দিয়েছেন যখন পিয়ার্স বলেছেন, লোকে বলে মেসি আপনার চেয়ে সেরা ফুটবলার। ‘আমি সেটা মনে করি না। এবং এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বিনয়ীও হতে চাই না। মেসি আসার আগে কি আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতেনি? এটা তাদের জন্য স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। তা ছাড়া বিশ্বকাপ জিতলেই সব কিছু অর্জন হয়ে যায়– এটাও আমি বিশ্বাস করি না। বিশ্বকাপে সাত-আটটা ম্যাচ জিতলেই কাউকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় বলে দেওয়া যায় না। আমার অন্তত বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন নেই।’
খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তাঁকে ঘিরে চলা একটি সমালোচনার উত্তরও দিয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পর্তুগাল জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড দিয়াগো জোতার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাননি রোনালদো। ‘আসলে দুটি কারণে আমি শেষকৃত্যে যাইনি। প্রথমত, লোকে আমাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করে, সেসব নিয়ে আমি ভাবি না। যখন একজনের নৈতিক বোধ ঠিক থাকে, তখন লোকে কী বলল তাতে যায় আসে না। তবে আমি একটি কথা জানাতে চাই, আমার বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি আর কখনোই কারও সমাধিস্থলে যাইনি। দ্বিতীয়ত, আমি চাইনি আমার উপস্থিতিতে সেখানে লোকের ভিড় জমে যাক। আমি যেখানেই যাই, সেখানেই লোকের ভিড় জমে যায়। এ ধরনের মনোযোগ আমি চাই না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



