আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়লে টাকার মান ধরে রাখা যায় না। তাই গ্রাহকরা স্বর্ণমুদ্রা কিনে রাখা লাভজনক মনে করছেন।
পাশাপাশি যুগটি মূল্যবান এ ধাতুর দাম কমার চেয়ে বাড়ার প্রবণতা বেশি থাকায় মূল্যবান ধাতুটির প্রতি ঝুঁকেছেন সব পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ।
সাধারণত যুদ্ধ বা মহামারিতে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ে। কাছাকাছি সময়ে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে যেমন, ইরান, ইরাক, লিবিয়া এমনকি চীন, যুক্তরাষ্ট্রের যে অর্থনৈতিক যুদ্ধ সব জায়গাতেই এমনটা দেখা গেছে। এবার পুরো ইউরোপেই সে দৃশ্য। এটি এমন এক ধরনের বিনিয়োগ যা একবার কিনলে বড় ধরনের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
অস্টিয়ান মিন্টের বেচা বিক্রি ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পুরোনো স্বর্ণমুদ্রা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা করছে ১৮৩০ সাল থেকে।
এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি স্বর্ণ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ক্রেতারা। চাহিদা এতটা আকাশ চুম্বি যে উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে অস্টিয়ান মিন্টের প্রধান নিবার্হী জেরহার্ড স্টারসিচ গণমাধ্যমকে বলেছেন, এটা একটা ধারাবাহিক কয়েকটি ঘটনার ফলাফল। যা শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারি থেকে তখন মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে স্বর্ণ বেচা বিক্রি বাড়ে। পাশাপাশি গত গ্রীষ্ম ও শরতে মুল্যস্ফীতি বাড়লে স্বর্ণের চাহিদা তরতর করে বাড়ে। আমাদের প্রতিষ্ঠান সাধারণ চাহিদার তিনগুণ বেশি উৎপাদন করেও চাহিদা মেটাতে পারেনি। সব স্বর্ণমূদ্রা বিক্রি হয়ে গেছে। এখন যা উৎপাদন হচ্ছে তা সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এটা কেবল ইউরোপে নয় আমেরিকাতেও একই পরিস্থিতি।
প্রতিষ্ঠানটির দাবির সত্যতা মিললো, ভিয়েনায় প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবনের সামনের মানুষের দীর্ঘ সারি দেখে। এখানে স্বর্ণমুদ্রা ক্রেতাদের গত কয়েক মাস ধরে একই চিত্র দেখা গেছে।
অস্টিয়ান মিন্টে স্বর্ণ কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, সাবার মাথায় একটি বিষয় ঘোরপাক খাচ্ছে তা হলো টাকার মান পড়ে যাচ্ছে, আরো ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারে। এ কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগ করছি দেখা যাক কপালে কি আছে।
তিনি বলেন, দেখুন এখন সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ যে মুল্যস্ফীতি সেটা মানব সৃষ্ট। ফলে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। এজন্য লাখ লাখ অজুহাত দাঁড় করানো হচ্ছে। এ অবস্থান পুঁজিবাজারও নিরাপদ নয়। সেখানে স্বর্ণে বিনিয়োগ অনেকটা নিরাপদ ভাবা যায়।
অস্টিয়ান মিন্টের হিসাব বলছে, এখন সব বয়সের ও পেশার মানুষ স্বর্ণমুদ্রা কিনছেন। ক্রেতাদের সবাই যে অস্টের নাগরিক তা কিন্তু নয়। বেশিরভাগই বিদেশি৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্ণমূদ্রার বাজার যুক্তরাষ্ট্রে। তারা গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে। সাধারণত গ্রাহকরা নিজ দেশ থেকে স্বর্ণ কিনতে চান। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রয়েল কানাডিয়ান মিন্ট এবং পার্থমিন্ট আমরা এ দুই দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি।
গত নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ লাখ আউন্স স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করেছে অস্টিয়ান মিন্ট। এ তথ্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষ অস্টের ন্যাশনাল ব্যাংক। ক্রিসমার্সের কারণে চলতি ডিসেম্বরে বাড়তি চাহিদা থাকে স্বর্ণের। কারণ স্বর্ণ উপহার হিসেবেও বেশ চাহিদা রয়েছে। যদি ২০২২ সাল শেষে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ১৮ লাখ আউন্স ছাড়াতে পারে। তাহলে ভাঙবে ২০০৯ সালের অস্টিয়ান মিন্টের স্বর্ণ বিক্রির রেকর্ড।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।