স্বল্প বৃষ্টিতে ভাগ্য খুলেছে অগ্রিম করলা চাষিদের, লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

করলা

জুমবাংলা ডেস্ক: অতি বর্ষণে জমিতে পানি জমলে করলা গাছ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মৌসুম শুরুর আগেই আবহাওয়া করলা চাষের অনুকূলে। এতে অগ্রিম করলা চাষে কৃষক পাচ্ছেন আশানুরূপ ফলন, দামও বেশি। এ অবস্থায় করলা বাজারজাতের উপযুক্ত হলেই বিক্রির পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। যদিও কম বৃষ্টিপাত আমন ধানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক।

মেহেরপুরে দেশি ও হাইব্রিড জাতের করলা চাষে ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষক। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে উৎপাদিত এ করলা ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। মেহেরপুরের উৎপাদিত করলা বাজারে উঠছে মাস দেড়েক আগেই। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বেশি বৃষ্টি হলে করলা ক্ষেতের ক্ষতি হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় ৫৭ হেক্টর জমিতে অগ্রিম করলার চাষ হয়েছে। গ্রীষ্ফ্মকালীন করলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১৩শ টন। এ সময় করলা বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন এ সবজি চাষে। সারাদেশে এর ভালো চাহিদাও রয়েছে।

গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের করলা চাষি আলী আহাম্মদ জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে চার বছর ধরে দেশি ও হাইব্রিড জাতের করলা চাষ করছেন। প্রতি বিঘায় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক মাসে দুই বিঘা জমি থেকে ৯৫ হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছেন। চার-পাঁচদিন পর পর ছয় থেকে সাত মণ করলা বিক্রির জন্য আড়তে পাঠান। আরও অন্তত ৯০ হাজার টাকার করলা বিক্রির আশা করছেন।
করলা
মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের করলা চাষি আশাদুল ইসলাম জানান, বিঘাপ্রতি ১২০ থেকে ১৪০ মণ করলা উত্তোলন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন। বর্তমান দরে করলা বিক্রি করতে পারলে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘরে তোলা সম্ভব হবে।

সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, করলার রোগবালাই কম। তবে মাঝেমধ্যে বৈরী আবহাওয়ায় গাছ শুকিয়ে যাওয়া ও পচন রোগ দেখা দেয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে রোগ বুঝে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়। লাভজনক হওয়ায় আগামী বছর তিনি চার বিঘা জমিতে করলা চাষ করবেন।

মেহেরপুর পৌর মার্কেটের কাঁচামালের আড়তদার মিজানুর রহমান মিজান বলেন, কৃষক করলা নিয়ে এলে অন্য জেলায় কমিশনে বিক্রি করেন। আড়তে হাইব্রিড করলা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। উচ্ছের দাম একটু বেশি। ভালো মানের উচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রেতারা কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশিতে বিক্রি করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুরের উপপরিচালক শঙ্কর কুমার মুজুমদার বলেন, কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও করলা চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হলেও দিন দিন বাড়ছে। কৃষকরা লাভবান হওয়ায় অন্যান্য সবজির পাশাপাশি করলা চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

প্রায় রেকর্ড পরিমাণ দরপতন ভারতীয় রুপির