জুমবাংলা ডেস্ক: আগামীকাল থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হচ্ছে। রাজধানী থেকে তিনটি অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ২৪টি ফ্লাইট ছেড়ে যাবে ও ফিরে আসবে। বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস)-এর কারণে বিগত দুই মাসের বেশি সময় ধরে বিমান চলাচল স্থগিত ছিল।
প্রতিদিনের এই ২৪টি ফ্লাইটের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ১১টি ফ্লাইট, ঢাকা- সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে নয়টি এবং ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
বিমান কোম্পানিগুলোর সূত্র জানিয়েছে, এই তিনটি রুটে প্রতিদিন জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার প্রতিদিন সাতটি করে এবং ইউএস-বাংলা ১০টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
বিমানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তাহেরা খন্দকার সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা আমাদের ডাস বিমানে ১ জুন থেকে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ও সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করব।’
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, তাদের প্রতিদিন বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ছয়টি, সৈয়দপুরে তিনটি ও সিলেটে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইভোএয়ারের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং প্রধান মেসবাহুল ইসলাম বলেন, তারা প্রতিদিন চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরে তিনটি করে এবং সিলেটে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করবেন।
বিমান কোম্পানির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, তারা ইতোমধ্যেই প্রতিবার যাত্রী উঠানোর পূর্বে বিমানগুলোকে জীবানুমুক্ত করাসহ সিএএবি’র স্বাস্থ্যবিধি মেনে অভ্যন্তরীণ রুটে পুনরায় ফ্লাইট পরিচালনা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
বৃহস্পতিবার সরকার প্রাথমিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে ১ জুন থেকে পুনরায় ফ্লাইট চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচলের ওপর স্থগিতাদেশ ১৫ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এদিকে, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহ্বুব আলী বিমানে ভ্রমনের সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও সামজিক দূরত্ব বজায় রাখতে যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার প্রস্তুতি পরিদর্শনের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি একথা বলেন।
বিমানবন্দর পরিদর্শনের পর তিনি বলেন, ‘যাত্রীরা যেন করোনাভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইট পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি সন্তোষজনক। তারা ১৫ জুনের পর যশোর ও রাজশাহীসহ অভ্যন্তরীণ সাতটি রুটের সবগুলো পুনরায় চালু করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
বাংলাদেশ (কাব) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, বিমান কোম্পানিগুলোকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে।
কাব-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, সকল বিমান কোম্পানিগুলোকে প্রতিটি ফ্লাইটে একই পরিবারের না হলে দুজন যাত্রীর মধ্যে অন্তত একটি আসন ফাঁকা নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্য অন্তত ৩০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, প্রতিটি ফ্লাইটের প্রথম বা শেষের সারির আসনগুলো ফাঁকা রাখতে হবে, যাতে করে কোন যাত্রী করোনা-আক্রান্ত সন্দেহ হলে তাকে সেখানে রাখা যায়।
ফ্লাইটের সকল স্টাফকে অবশ্যই মাস্ক, গ্লোভস ও ডিসপোজেল হেড ক্যাপ পরতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, কেবিন ক্রুদের এন ৯৫ অথবা সমমানের সুরক্ষাবিশিষ্ট মাস্ক, গগলস, ডিসপোজেবল রাবার গ্লোভস পরতে হবে এবং প্রতি চার ঘন্টা পরপর মাস্ক পাল্টাতে হবে।
ক্রুরা যাত্রীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন। তারা শুধু প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করবেন।
যাত্রীরা সামাজিক দূরত্ব মেনে চেক-ইন কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়াবেন। বিমানে উঠানোর আগে তাদের দেহের তাপমাত্রা মাপা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।