বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : অফিসের কাজ বা লেখাপড়া কিংবা বিনোদন ল্যাপটপের রয়েছে বহুমাত্রিক ব্যবহার। তবে অনেকদিন কাজ করার ফলে ধীরে ধীরে ল্যাপটপের গতি কমে আসে। যা একটি যথেষ্ট বিরক্তিকর বিষয়। ধীরগতি হয়ে যাওয়া ল্যাপটপের গতি ফিরিয়ে আনার অনেক কৌশল রয়েছে। স্লো হলে প্রথমে দেখতে হবে যে, এমন কোনো অ্যাপ আছে কি না, যা অত্যধিক মেমোরি ব্যবহার করছে। এ ছাড়া একবার নিজেদের ল্যাপটপ রিস্টার্ট করতে হবে এবং দেখতে হবে সেই সমস্যাটির সমাধান হয়েছে কি না। ল্যাপটপ চালু না হলে, পাওয়ার, এক্সটার্নাল ডিভাইস এবং ডিসপ্লে চেক করুন। যদি তারপরও ল্যাপটপ চালু না হয়, তাহলে প্রথমে নিজেদের পাওয়ার সাপ্লাই চেক করে দেখুন। যদি এটি ঠিক থাকে এবং ল্যাপটপ চার্জ না হয়, তাহলে এটির সঙ্গে কোনো বাহ্যিক ডিভাইস সংযুক্ত আছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে। এরপর ডিসপ্লে ঠিক আছে কি না তা চেক করে নেওয়ার পালা। এইচডিএমআই তারের মাধ্যমে একটি বাহ্যিক ডিসপ্লে সংযুক্ত করতে হবে এবং ল্যাপটপ চালু হয় কি না তা দেখতে হবে।
যদি এভাবে ঠিক না হয় তাহলে প্রথমেই খুঁজে বের করুন আপনার ল্যাপটপে কোনো ভাইরাস এফেক্টেড হয়েছে কি না। ভাইরাস, ম্যালওয়্যার পরীক্ষা করতে একটি অ্যান্টি ভাইরাস স্ক্যানার চালু করতে হবে। ল্যাপটপে লোডিংয়ের সময় অযথা দেরি হলে ধরে নিন হবে ম্যালওয়্যার হানা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনো ভালো অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ইনস্টল করে নিন। তাতে করে ল্যাপটপের গতি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর সফটওয়্যারগুলোও সুরক্ষিত থাকবে।
অপ্রয়োজনীয় একাধিক ফাইল জমে ল্যাপটপে গতি কমে যেতে পারে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত বা নিতান্ত অপ্রয়োজনীয় ফাইল রিসাইকল বিনে পাঠিয়ে দেওয়াই ভালো। বেশখানিকটা জায়গা খালি হবে।
ল্যাপটপের গতি বাড়াতে হার্ড ড্রাইভের জায়গা খালি রাখা খুবই জরুরি। কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভ সম্পূর্ণ ভরে রাখা একেবারেই উচিত নয়। অনেকেই মনে করেন হার্ড ড্রাইভের ৮৫ শতাংশ ভরে গেলেই তা যন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এতে প্রায় ৫০ শতাংশ গতি হ্রাস পেতে পারে ল্যাপটপের। ডাউনলোড করা প্রোগ্রাম, ছবি, গানের লাইব্রেরি হার্ড ড্রাইভের ওপর চাপ বাড়ায়। যেগুলো নিয়মিত ব্যবহার হয় না সেগুলো সরিয়ে ফেলা উচিত।
ব্রাউজার পরিষ্কার রাখাও জরুরি। সারাদিনের ইন্টারনেট সার্ফিংয়ের ওপরও ল্যাপটপের গতি নির্ভর করে। একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলে রাখার অভ্যাস আছে অনেকেরই। চালু ট্যাবগুলোর হিস্ট্রি ডিভাইসে জমতে থাকে। এতে ব্রাউজার ওভারলোড হয়ে গতি কমে যায় ল্যাপটপের। ট্যাবগুলো ব্রাউজিং হিস্ট্রি জমিয়ে রাখবেন না। নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
আপনার ল্যাপটপটি সব সময় আপ-টু-ডেট রাখতে হবে। মানে ল্যাপটপে যেন সব সময় লেটেস্ট ভার্সন থাকে। যা আগের ভার্সন থেকে কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে আসে। এতে ল্যাপটপের ভালো পারফরমেন্সের পাশাপাশি নানান সুবিধাও পাওয়া যাবে। আপনার ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেম, ড্রাইভার এবং সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন আপডেট আপনার ল্যাপটপের গতি বাড়াতে এবং সিস্টেমের নিরাপত্তা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। তাই চেষ্টা করুন নতুন আপডেট সময় মতো করে নেওয়ার।
অব্যবহৃত প্রোগ্রাম এবং অ্যাপ না রাখা ল্যাপটপে ইনস্টল করা কিন্তু ব্যবহার করছেন না, এমন অ্যাপ বা প্রোগ্রাম আনইন্সটল করুন। এতে অনেক স্পেস ফাঁকা হবে।
অবাঞ্ছিত ফাইল মুছে ফেলতে হবে। আপনার ল্যাপটপে যত বেশি ফাইল এবং ডেটা থাকবে, এটি গতিকে তত বেশি প্রভাবিত করে। তাই নিয়মিত আপনার ল্যাপটপের অবাঞ্ছিত ফাইল মুছে ফেলুন।
নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করা উচিত। নিয়মিত বিরতিতে ভাইরাসের জন্য আপনার ল্যাপটপ স্ক্যান করুন। ভাইরাস এবং ম্যালওয়ারের শিকার হলে অনেক সময় ল্যাপটপ ধীরে কাজ করে।
অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ করুন। আপনি যখন আপনার ল্যাপটপ ব্যবহার করছেন, তখন এক সঙ্গে কতগুলো প্রোগ্রাম চলছে সেদিকে নজর দিন। অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ করুন। এক কারণ হলো অনেক প্রোগ্রাম কাজ করলে, ল্যাপটপটি স্লো হয়ে যায়। ফলে, হ্যাং করে।
অপ্রয়োজনীয় স্টার্ট-আপ ডিজেইবল করে দিন। কিছু অ্যাপ ল্যাপটপ অন করার সময় অটো খুলে যায়। এসব অ্যাপ ল্যাপটপের গতিতে প্রভাবে ফেলে। মাইক্রোসফট বলছে, এই ধরনের প্রোগ্রাম হ্যান্ডিক্যাপ করে দিলে ল্যাপটপ ভালো পারফর্মমেন্স দেবে।
ল্যাপটপটি বাহ্যিকভাবেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। যেমন চার্জিং পয়েন্টে অনেক সময় ধুলাবালি জমে গিয়ে চার্জের গতি কমে যেতে পারে। তাই কটন বাড দিয়ে চার্জিং পয়েন্টটি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ল্যাপটপের সঙ্গে থাকা মাউস টাচটিও পরিষ্কার রাখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।