হঠাৎ পথচারীর ওপর শিয়ালের আক্রমণ, কামড়ে নিয়ে গেল অণ্ডকোষ

পথচারীর ওপর শিয়ালের আক্রমণ

পথচারীর ওপর শিয়ালের আক্রমণজুমবাংলা ডেস্ক : লালমনিরহাটে হঠাৎ করে শিয়ালের আক্রমণ বেড়েছে। এরই মধ্যে একজনের অণ্ডকোষ কামড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাটে। এদিন একরাতেই শিয়ালের কামড়ে ৯ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে শিয়ালের কামড়ে আহতরা লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দেশ টিভি অনলাইনের করা প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-

সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে শহরের ব্যস্ততম এলাকা মিশনমোড়, সার্কিট হাউজ, পুলিশ লাইন ও বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই রাস্তায় রাস্তায় লোকজনকে লাঠি হাতে পাহাড়া দিতে দেখতে পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ লাইন সংলগ্ন মোটরসাইকেল মেকানিক্স সাইদুল ইসলাম জানান, তার দোকানের সামনেই একটি শিয়াল আকস্মিক প্রবেশ করে পথচারীদের যাকে পেয়েছে তাকেই কামড়ে দিয়েছে। এ সময় শিয়ালটিকে কুকুর আক্রমণ করতে গেলে উল্টো শিয়ালটিই কুকুরগুলোকে ধাওয়া দেয়। পরে তিনি ও তার দোকানের কর্মচারী এবং শহরের লোকজন শিয়ালটিকে মারার জন্য ধাওয়া করেও ধরতে পারিনি। এরপর শিয়ালটি লোকজন দেখে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর শিয়ালটি আবারও বের হয়ে আক্রমণ করে। এভাবে অনেক সময় ধরে শিয়ালটি মানুষের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা খেলতে থাকে। শিয়ালটি আবার কখন লোকজনকে আক্রমণ করে সেই শঙ্কায় জেলা শহরের মিশনমোড়, সার্কিট হাউস ও পুলিশ লাইন এলাকার লোকজন।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে জেমস্ পিটার শচিন নামে জেলা ট্রাক ও ট্র্যাংকলড়ী শ্রমিকের অণ্ডকোষ ও মোখলেস নামে এক মধ্যবয়সী লোকের কান কামড়ে নিয়ে গেছে শিয়ালটি। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

শিয়ালের কামড়ে আহত শ্রমিক নেতা জেমস্ পিটার শচিন জানান, জেলা শহরের হাড়িভাঙ্গা থেকে পুলিশ লাইন ও সার্কিট হাউজের সামনে দিয়ে মিশনমোড় যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ কোথা থেকে একটি শিয়াল এসে তাকে আক্রমণ করে। এ সময় শিয়ালটির কামড়ে তার অণ্ডকোষের কিছু অংশ শিয়ালের কামড়ের কারণে ছিড়ে যায়। নিজেকে রক্ষা করতে শিয়ালের সাথে অনেক সময় ধরে যুদ্ধ করতে হয় তাকে। পরে একজন পথচারী লাঠি নিয়ে এসে মার দেওয়ার পর শিয়ালটি পালিয়ে যায়। এরমধ্যেই তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় বসিয়ে দেয় শিয়লটি। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সেনামৈত্রী বাজারের মোবাইল ব্যবসায়ী সাব্বির আহমেদ জানান, আমরা কয়েকজন একত্রিত হয়ে শিয়ালটিকে মারতে যায়। পরে শিয়ালটি আমাদেরকেও আক্রমণ করতে আসে। শিয়ালের কামড়ের ভয়ে ও হিংস্রতার কারণে সড়কের লোকজন ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে চলে যান। এরমধ্যেই শিয়ালটি একটি শিশুসহ একে একে শহরের আরও ৭ জনকে কামড়ে দেয়।

লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সামিরা হোসেন চৌধুরী জানান, আমাদের এখানে শিয়ালের কামড়ে আহত অবস্থায় চারজন ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে আলিফ নামে একজন শিশুও আছেন। আহতদের চিকিৎসার পর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শচিন ও মোখলেস নামে দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৫/৬ জন পথচারীকে শিয়াল কামড়িয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। কিন্তু তারা হাসপতালে চিকিৎসা নিতে আসে নাই।

লালমনিরহাট বন বিভাগের কর্মকর্তা মাহবুবুল হক জানান, খাবার সংকট এবং বাসস্থানের অভাবে শিয়ালসহ কিছু বন্যপ্রাণী লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। লোক মারফত জানতে পারলাম ৯-১০ জন পথচারীকে শিয়াল কামড়ে আহত করেছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন। হিংস্র শিয়ালগুলোকে পাকড়াও করার জন্য তাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করছেন বলেও তিনি জানান।

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও খরচ নিয়ে চিন্তায় দিনমজুরের মেয়ে প্রান্তি