১৬ আগস্ট ১৯৪৫ সালের কথা মানবজাতি কখনো ভুলতে পারবে না। ঐ দিন জাপানে পারমাণবিক বোমা ফেলার কারণে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিল। তবে আজকের দিনে মানুষের কাছে এর থেকেও ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী মরনাস্ত্র রয়েছে। এটি হচ্ছে থার্মাল নিউক্লিয়ার ওয়েপন বা হাইড্রোজেন বোমা।
হাইড্রোজেন বোমা 16 কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মাঝে সবকিছুকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তবে পারমাণবিক বোমার পরিসীমা এতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত নয়। পৃথিবীতে এ হাইড্রোজেন বোমা এত পরিমাণে উৎপাদিত হয়েছে যে পৃথিবীর সব মানুষকে কয়েকবার মেরে ফেলা সম্ভব।
হাইড্রোজেন বোমা যেদিন প্রথম টেস্ট করা হয় ঐদিন এক কোটি টন টিএনটি এর সমপরিমাণ শক্তি উৎপাদিত হয়েছিল যেটা এটমিক বোমা থেকে অনেক বেশি। অ্যাটমিক শক্তির ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ার ফিশন প্রক্রিয়া চালু থাকে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
হাইড্রোজেন বোমার ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া কাজ করে। ফিউশন বিক্রিয়া ফিশন বিক্রিয়ার থেকে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী। এ কারণে হাইড্রোজেন বোমা এতটা বিধ্বংসী হিসেবে কাজ করে। হাইড্রোজেন বোমার ক্ষেত্রে যে ইউনিক বিষয়টি ঘটে তা হচ্ছে টিট্রিয়াম আইসোটপ তৈরি হয়।
হাইড্রোজেন এবং লিথিয়াম একসাথে করা হলে এ বোমার মধ্যেই টিট্রিয়াম আইসোটোপ তৈরি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে আইসোটোপের কম্পন বৃদ্ধি পায়। একটা সময় এ তাপমাত্রা ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
হাইড্রোজেন বোমা তিনটি আলাদা ক্যাটাগরির বোমার সাহায্যে তৈরি। একটি কেমিক্যাল বোমা, দ্বিতীয়টি ফিউশন বোমা ও সর্বশেষটি হলো ফিউশন বোমা। ভিতরের গোলাকার অ্যাটোমিক বোমটি বেরেলিয়ামের প্রাচীর দ্বারা ঢাকা থাকে।
তার নিচে থাকে সিলিন্ডার আকৃতির ইউরেনিয়াম কন্টেইনার। এ বোমাটি ফেলা হলে চেইন রিএকশন সৃষ্টি হয়। এরপর এক্সরে এবং ক্ষতিকর গামা রশ্নি নির্গত হয়। তারপর ফিজিক্যাল শকওয়েভ তৈরি হয়। হিলিয়াম থেকে নিউট্রন নির্গত হয়।
ফিউশন এবং ফিশন বিক্রিয়া পর্যায়ক্রমে চলার মাধ্যমে বিশাল বিস্ফোরণ এর সৃষ্টি হয়। এ জটিল প্রক্রিয়া ৬০০ ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যেই সম্পাদিত হয়ে থাকে। এখানে আইনস্টাইনের সূত্র ব্যবহার করে কাজ করা হয়। পৃথিবীতে মাত্র ছয়টি দেশের কাছে এই হাইড্রোজেন বোমা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।