জুমবাংলা ডেস্ক : উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর হাতিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাত ও তীব্র বাতাসের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় স্থানীয় প্রশাসন হাতিয়ায় সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে।
Table of Contents
নিম্নচাপের প্রভাব ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট সুষ্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর ফলে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। হাতিয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।
সমুদ্র উত্তাল, জারি রয়েছে তিন নম্বর সংকেত
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের আশেপাশে সাগর উত্তাল থাকায় সকল মাছধরা নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশনা জারি রয়েছে। হাতিয়াসহ উপকূলজুড়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
হাতিয়ায় নৌ চলাচল বন্ধ, প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলাউদ্দিন জানান, সাগর উত্তাল থাকায় বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে হাতিয়ায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এ ছাড়া মাছ ধরার সব ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
প্লাবিত নিঝুম দ্বীপ ও স্থানীয় পরিস্থিতি
স্থানীয়রা জানান, মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় নদীপাড়ে দোকানপাট সরিয়ে নিতে হয়েছে। কিছু দোকান জোয়ারের তোড়ে নদীতে ভেসে গেছে। নিঝুম দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ায় জোয়ারের কারণে জীবনযাত্রায় দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ।
প্রশাসনের প্রস্তুতি ও নির্দেশনা
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিকাক আহমেদ জানিয়েছেন, হাতিয়াসহ উপকূলীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের আবহাওয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলোর ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়ায় একটানা বৃষ্টি, জোয়ার ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। সাগর উত্তাল থাকায় নৌযান চলাচল বন্ধ এবং মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে যাতে হাতিয়ায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস : রাজধানীসহ সারাদেশে বৃষ্টি, নেই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা
FAQs: হাতিয়া সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১: হাতিয়ায় বর্তমানে কেমন আবহাওয়া বিরাজ করছে?
হাতিয়ায় বর্তমানে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া চলছে। আবহাওয়া অফিস তিন নম্বর স্থানীয় সংকেত জারি করেছে।
প্রশ্ন ২: হাতিয়ায় নৌ চলাচলের অবস্থা কী?
সাগর উত্তাল থাকায় হাতিয়ায় বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আদেশটি আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
প্রশ্ন ৩: হাতিয়ায় কোন এলাকা প্লাবিত হয়েছে?
নিঝুম দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় সেখানে অধিকাংশ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
প্রশ্ন ৪: হাতিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে কি?
হ্যাঁ, হাতিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন ৫: হাতিয়ায় মৎস্যজীবীদের জন্য কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে?
হাতিয়ায় অবস্থানরত সব মাছধরা নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে যাওয়া নিষেধ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।