স্পোর্টস ডেস্ক : সোশ্যাল সাইটে নিয়মিত মুখ শোয়েব আখতার। নিয়মিতভাবেই তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের ইউটিউবে মতামত দিয়ে থাকেন। এবার পাকিস্তান ক্রিকেট দলে তার সতীর্থ লেগস্পিনার দানিশ কানেরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বোমা ফাটালেন রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস। তিনি জানান, পাকিস্তান ক্রিকেট দলে বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়ার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। কারণ দানিশ হিন্দু। যে কারণে তার বিপদে কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। শোয়েবের এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পাকিস্তানের দ্বিতীয় হিন্দু ক্রিকেটার ছিলেন দানিশ কানেরিয়া। তার মামা অনিল দলপত ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু ক্রিকেটার। পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্ট ম্যাচে ২৬১ উইকেট নিয়েছেন দানিশ। গড় ৩৪.৭৯। পাকিস্তানের হয়ে ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছেন। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্লাব এসেক্সের হয়ে খেলার সময়ে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে দানিশকে নির্বাসিত করে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তার পরে অনেকের কাছেই সাহায্যের আবেদন করেন কানেরিয়া। কিন্তু স্রেফ হিন্দু হওয়ায় এই স্পিনারের আবেদনে কেউই কর্ণপাত করেনি।
বৃহস্পতিবার পাক টিভিতে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে শোয়েব বলেন, ‘আমার খেলোয়াড় জীবনে আমি দু’তিন জনের সঙ্গে সরাসরি লড়াই করেছি, যখন তারা ধর্ম নিয়ে কথা বলেছে। তারা যখন বলত, কে করাচির, কে পাঞ্জাবের বা কে পেশোয়ারের? এসব শুনে রাগ হতো। সেরকমই কোনো ক্রিকেটার যদি হিন্দু হয়, আর সে যদি পাকিস্তান দলের হয়ে ভালো পারফরম্যান্স করে, তা হলে ধর্মের কথা ওঠে কী ভাবে? ওর সঙ্গে অনেকেই খারাপ আচরণ করত। আমি ভবিষ্যতে তাদের নামও প্রকাশ করব।’
শোয়েব আরও বলেন, ‘সেই ক্রিকেটারেরা বলত, স্যার, এই ছেলেটি এখান থেকে খাবার নিচ্ছে কেন? তারা দানিশের সঙ্গে খেতেও চাইত না! অথচ সেই হিন্দু ছেলেটাই আমাদের টেস্ট জিতিয়েছিল ইংল্যান্ডে। যদি পাকিস্তানের হয়ে খেলতে নেমে কেউ প্রচুর উইকেট পায়, তাহলে তারই তো খেলা উচিত। আমরা কানেরিয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা ছাড়া টেস্ট জিততে পারতাম না। কিন্তু দলের অনেকেই ওকে সেই কৃতিত্ব দিতে চায় না। এটা খুব জঘন্য ব্যাপার ছিল। আমি মেনে নিতে পারতাম না।’
শোয়েবের এই বক্তব্য নিয়ে দানিশ কানোরিয়া বলেন, ‘শোয়েব ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি। ওর কথাবার্তাও ওর বলের মতোই শাণিত। যখন পাকিস্তানের হয়ে খেলতাম, তখন এই কথাগুলো প্রকাশ্যে বলার সাহস ছিল না। কিন্তু শোয়েবের এই বক্তব্যের পরে এবার মুখ খুলব। শুধু শোয়েব নয়, ওই সময়ে আমার হয়ে লড়েছে ইনজি ভাই (ইনজামাম-উল-হক), মোহাম্মদ ইউসুফ ও ইউনিস ভাই (ইউনিস খান)। এটাও বলতে চাই, পাকিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।