জাহিদুল ইসলাম, ইউএনবি: দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়কটি দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি মানুষজনকে চলাচল করতে হয়। সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যেন গর্ত ও খানাখন্দে ভরা এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ। লাগাতার বৃষ্টি হলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর তাই প্রায়ই ঘটে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা। হিলি বন্দরের প্রধান সড়কটি বর্তমানে অকার্যকর হয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর ‘পানামা হিলি পোর্টের’ ১নং গেট থেকে দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত প্রধান সড়কটির পরিমাণ দেড় কিলোমিটার। সড়কের কয়েক হাত পর-পর ছোট-বড় মিলে অন্তত ২০-২৫টি গর্ত এবং খানাখন্দে ভরা। কার্পেটিং উঠে বন্দরের এই ব্যস্ততম সড়কটি যেন গর্ত ও খানাখন্দে ভরা এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রধান সড়কের চারমাথা মোড়, হিলি মটরসের সামনে, বাস টার্মিনাল, শান্তির মোড়, উপজেলা পরিষদ গেট, বিএডিসির গোডাউনের সামনে এবং সুরুজ চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে, রাজধানী মোড়ের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত কোনো কোনোটি একফুটের চেয়ে গভীর। সড়কের দুপাশে এবং এসব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণে বাণিজ্যিক শহর হিলি এখন কাদামক্ত শহরে পরিণত হয়েছে।
বন্দরের ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ জানান, প্রতিদিনই মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে আমদানি করা পণ্য পরিবহন করছে। সড়কটির অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে থাকলেও সংস্কারে বা নতুন করে নির্মাণে সরকার কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এই বন্দর থেকে সরকার আমদানি-রপ্তানি খাত থেকে প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
দিনাজপুর মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বাংলাহিলি বাস শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান মিলন জানান, হিলি থেকে ঢাকা, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুরে যাওয়ার জন্য সড়ক ব্যবস্থা গড়ে উঠায় প্রতিদিন এই পথে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। কিন্তু সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কগুলোর কোনো সংস্কার করা হচ্ছে না।
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, হিলি বন্দরের সাথে ঢাকা, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুরের সড়ক যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। একারণে বন্দরটি দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ওইসব অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এই বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে সহজেই পণ্য আমদানি করে থাকেন। আবার আমদানি করা পণ্য দ্রুত তাদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বন্দরের এই প্রধান সড়কটি বর্তমানে অকার্যকর হয়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বা নতুন করে সড়ক তৈরি করা হয়নি। এতে করে বন্দরের ব্যবসায়ীসহ সব পেশার মানুষের কাছে বন্দরটির গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপরও।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সরকার বন্দরের গুরুত্ব বিবেচনায় এই সড়কটি প্রশস্তকরণসহ নতুন করে নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছে বলে শুনেছি। কিছুদিনের মধ্যে সড়কের দুই পাশের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (সুপারিনটেনডেন্ট) নুর আমীন জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বন্দর থেকে ২৩৩ কোটি ১ লাখ ৮১ হাজার টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।