১০ বছরের শিশু শিক্ষার্থীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, মুহতামিম গ্রেপ্তার

জুমবাংলা ডেস্ক : দিনাজপুরের বিরামপুরে পায়ে শিকল বেঁধে মারুফ হোসেন নামে ১০ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদরাসার মোহতামিমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মাছুম মিয়া বাদী হয়ে শিশু আইনে মামলা করলে গতকাল বুধবার রাতেই মুহতামিম লুৎফর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার সময় উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদরাসার পাশে ধানক্ষেত থেকে শিশু শিক্ষার্থী মারুফ হোসেনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে শিশুটিকে বিরামপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

নির্যাতিত শিশু পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার মহারাজপুর এলাকার মাছুম মিয়ার ছেলে। আটক মুহতামিম লুৎফর রহমান ফুলবাড়ি উপজেলার রুদ্রানী (মন্ডলপাড়া) গ্রামের সাইফুর রহমানের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিওড় ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদরাসায় শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন গত ১ মাস যাবৎ লেখাপড়া করে আসছিল। মঙ্গলবার দুপুরে ওই মাদরাসার মুহতামিম লুৎফর রহমান অফিস কক্ষে তার দুই পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শারীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। তিনি শিশুটির ডান পা ও বাম পায়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। অমানবিক নির্যাতনের ফলে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে মাদরাসার মুহতামিম অফিস কক্ষের বাইরে চলে যায়।

সন্ধ্যার সময় শিশুটি কৌশলে অফিস থেকে বের হয়ে পার্শ্ববতী গ্রামের তৈয়বপুর চৌধুরী পাড়ায় ধানক্ষেতে মুমূর্ষূ অবস্থায় পড়ে থাকে। এলাকাবাসী তাকে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে বিরামপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার বাবার হেফাজতে দেন।

জানতে চাইলে মুহতামিম মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘শিশুটির মা বলেছিল লেখাপড়া না করলে বা বেয়াদবি করলে শাসন করতে। আমি শাসন করে ভুল করেছি?’

এ ব্যাপারে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির জানান, ধানক্ষেতে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় একটি শিশু পড়ে আছে- এমন খবরে শুনে ঘটনাস্থল থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তার বাবার হেফাজতে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। শিশুটির বাবা শিশু নির্যাতন আইন-এ মামলা করলে রাতেই মুহতামিমকে গ্রেপ্তার করে দিনাজপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।