নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আলুর প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং ১২ জন উদ্যোক্তার মাঝে আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্যোক্তাগণের মাঝে আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেছেন, দেশে চাহিদার তুলনায় আলুর উৎপাদন পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে। সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও কয়েক বছরে বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আলু চাষ। এক্ষেত্রে আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আলুর প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা নিজেরাই তাদের ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারবে। এর ফলে দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। দেশে যে পরিমাণ আলু উৎপাদন হয় তা পুরোপুরি সংরক্ষণ করার মতো স্টোরেজ দেশে নেই। এর মাধ্যমে আলুর অপচয় রোধ করে সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি হাতে পেয়ে উদ্যোক্তাতাদের মধ্যে রোখসানা জামান লাবনি বলেন, আমি হোমমেড আইটেমগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমার নগরীর হেতম খাঁ এলাকায় লাবনি’স কিচেন নামে একটি ফাস্টফুড আইটেমের দোকান রয়েছে। আমি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে কিছু যন্ত্রপাতি পেয়েছি যেগুলো আমার ব্যবসাটাকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। আজকে আমাকে আলু কাটিং মেশিন, আলু ড্রায়ার, আলু ছিলার মেশিনসহ ১০ থেকে ১২ টার মতো যন্ত্রপাতি তারা দিয়েছে। এর মাধ্যমে আমার ব্যবসার পরিধিটা বাড়াতে পারব এবং আমার স্বপ্ন পূরণে আরও এগিয়ে যাব। এগুলো প্রদানের জন্য কৃষি অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
চার মাস আগে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি পেয়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন ‘হেঁশেল ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট’ এর সত্ত্বাধিকারী সোনিয়া খাতুন। তিনি জানান, নগরীর বিমান চত্ত্বর এলাকায় চার বছর আগে করোনা কালীন সময়ে চাকুরী হারিয়ে নিরুপায় হয়ে ‘হেঁশেল ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট’এর যাত্রা শুরু করি। তিন দিন প্রশিক্ষণ শেষে আমি আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি হিসেবে আলু কাটিং মেশিন, আলু ড্রায়ার, আলু ছিলার মেশিনসহ ১০ থেকে ১২ টার মতো যন্ত্রপাতি পেয়েছিলাম। এর ফলে আমার রেস্টুরেন্টে কাজের গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আমি অনেক লাভবান হয়েছি।
আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতির সুবিধাভোগী নগরীর সোনিয়া খাতুন আরো বলেন, রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে আমি চার মাস আগে আলুর বহুমুখী ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নিয়ে ছিলাম। আমাদের দেশে যে পরিমাণ আলু উৎপাদিত হয় সেই পরিমাণে ব্যবহৃত হয় না। তরকারি রান্না ছাড়াও আলু অনেকভাবে ব্যবহার করা যায়। যা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমি জেনেছি। আমরা যদি আলুর সঠিক ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমরা অবশ্যই লাভবান হতে পারব।
আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, আজকে রাজশাহীতে প্রায় ২৫ জনের মতো উদ্যেক্তাকে প্রশিক্ষণ ও ১২ জনকে যন্ত্রপাতি প্রদান করা হলো। পর্যায়ক্রমে এ জেলার আরও অনেকজনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। দেশের ১৬টি আলু উৎপাদকারী জেলায় ২১৬ জনের মাঝে এমন যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে। আর এর চারগুণ উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এসময় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজশাহীর উপপরিচালক (দায়িত্ব প্রাপ্ত) মো. শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আনোয়ারুল হক। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজশাহীর প্রশিক্ষক আফরিন হোসেন এঁর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহনাজ পারভীন।
উল্লেখ্য, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের আওতাধীন রাজশাহী সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজনে এবং আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলার ২৫ জন উদ্যোক্তাদের আলুর প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং ১২ জন উদ্যোক্তাগণের মাঝে আলু প্রসেসিং যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।