জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর লালবাগ এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমানের তিন মাস বয়সী শিশুসন্তান খিঁচুনিতে আক্রান্ত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ইনসেপ্টা কোম্পানির বারবিট (জেনেরিক নাম ফিনোবারবিটাল সোডিয়াম) ইনজেকশন দেওয়া হয়। সম্প্রতি বাসার আশপাশের ওষুধের দোকানে ইনজেকশনটি না পেয়ে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় যান আরিফুর। সেখানে কয়েক দোকান ঘুরে ইনজেকশনটি পেলেও কিনতে অস্বাভাবিক দাম দিতে হয়েছে তাঁকে। ১৬ টাকার বারবিট ইনজেকশনের দাম ৩০০ টাকা রেখেছেন দোকানি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি করা পাঁচটি বারবিট ইনজেকশনের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮০ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটির দাম ১৬ টাকা পড়ার কথা। কিন্তু ওষুধটির সরবরাহ সংকট এত তীব্র যে অনেক দোকান ঘুরেও তা মিলছে না। দু-একটি দোকানে মিললেও এ জন্য চড়া দাম দিতে হচ্ছে রোগীর স্বজন বা ক্রেতাকে।
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত মেসার্স এমএস মেডিকেল হলের বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফ হোসেন জানান, বাজারে ইনসেপ্টা কোম্পানির বারবিটা ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকটকে পুঁজি করে যে যার মতো দামে বিক্রি করছেন তা।
শুধু বারবিটা ইনজেকশন নয়, একই নামের সিরাপ ও ট্যাবলেটও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। মিটফোর্ড এলাকার বিভিন্ন ফার্মেসির বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, ইনসেপ্টা কোম্পানির ৫০ টাকা মূল্যের বারবিটা সিরাপ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। ৩০ মিলিগ্রামের ১০টি ট্যাবলেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল ১০ টাকা, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। ৬০ মিলিগ্রামের ১০টি ট্যাবলেটের সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ১৫ টাকা। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। তবে অনেক ফার্মেসিতেই ওষুধটির সরবরাহ নেই।
ফিনোবারবিটাল ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ফিনোবারবিটাল ওষুধ নবজাত থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের খিঁচুনিতে আক্রান্ত মানুষকে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওষুধটির দাম কম হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশে মৃগী রোগীদেরও দেওয়া হয়। এটি খিঁচুনি ও মৃগী রোগীদের জন্য খুবই ভালো ও কার্যকরী একটি ওষুধ।
খিঁচুনিরোধী এই ওষুধের এত দাম কেন—সেই খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, কাঁচামালের সংকটে বর্তমানে ওষুধটির উৎপাদন বন্ধ রেখেছে ইনসেপ্টা। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা বলেন, বারবিটা ওষুধের কাঁচামালের সংকট থাকায় সেটি উৎপাদন হচ্ছিল না। এ কারণে বাজারেও সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের কোম্পানির ওষুধটি বাজারে সরবরাহ দেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বাজারে ফিনোবারবিটাল ওষুধের সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ূব হোসেন বলেন, ফিনোবারবিটাল ওষুধটি উৎপাদনের জন্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস ছাড়া আরও ইডিসিএল, অপসোনিন, গণস্বাস্থ্য, বায়োফার্মাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন নিয়েছে। তারা কেন ওষুধটি উৎপাদন করছে না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। সূত্র : আজকের পত্রিকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।