সম্প্রতি নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) ১৬ সাইকি গ্রহাণুটির ছবি তুলেছে। আর সেই ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আরও কিছু নতুন তথ্য পেয়েছেন। এতদিন ধারণা করা হয়েছিল, গ্রহণুটিতে শুধু ধাতব মৌল রয়েছে। কিন্তু এখন জেমস ওয়েবের ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, গ্রহাণুর পৃষ্ঠে হাইড্রোক্সিল (OH) ও পানি (H2O) রয়েছে। এই অণুগুলো গ্রহাণুর ধাতুর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে মরিচা তৈরি করতে পারে।
তা ছাড়া এতদিন গ্রহাণুটির যে ঘনত্ব আশা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা, তাও মিলছে না। ওটার ঘনত্ব তুলনামূলক কম। পাশাপাশি যে পরিমাণ ধাতব মৌল থাকার কথা ছিল, সে পরিমাণ না-ও থাকতে পারে। কারণ ১৬ সাইকিতে যে পানি থাকতে পারে, তা বিজ্ঞানীরা আগে ভাবেননি। এমনকি গ্রহাণুটি সিলিকেট সমৃদ্ধ হওয়ার ধারণাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
১৬ সাইকির ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আরও একটা নতুন হাইপোথিসিস দাঁড় করিয়েছেন। হতে পারে, গ্রহাণুটি সৌরজগতের এমন জায়গায় গঠিত হয়েছিল, যেখানে পানি জমে শক্ত বরফে পরিণত হওয়ার মতো ঠান্ডা ছিল। এই হাইপোথিসিস যদি সত্যি হয়, তাহলে গ্রহাণুটি ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সম্পদের পরিবর্তে আমাদের শুধু পানি দিতে পারবে, যা পৃথিবীতে যথেষ্ট রয়েছে।
তবে গ্রহাণুটি নিয়ে এখনই বিস্তারিত মন্তব্য করার সময় আসেনি। কারণ সবকিছু এখনো অনিশ্চিত। হয়তো এতদিন বিজ্ঞানীরা যা ভেবেছেন, তা না হয়ে সম্পূর্ণ নতুন কিছু আবিষ্কৃত হতে পারে। আসলে ওই গ্রহাণুতে কী আছে, তা স্পষ্ট করে জানতে হলে আরও ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। আগেই বলেছি, নাসা ইতিমধ্যে সাইকি নামে একটা মিশন পরিচালনা করছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে এ মিশনের অংশ হিসেবে একই নামের একটি নভোযান ১৬ সাইকির দিকে রওনা দিয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২০২৯ সালে গ্রহাণুটির কাছে গিয়ে পৌঁছাবে নভোযানটি। তখনই সব কিছু জানা যাবে সবিস্তারে।
গ্রহাণুটি এখন রয়েছে বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহের মাঝামাঝি কোনো জায়গায়। এই মিশনের সাহায্যে গ্রহাণুটির পৃষ্ঠ ও গঠন কাঠামো পরীক্ষা করবে নাসা। আর সত্যিই যদি ওখানে অতিমূল্যবান সম্পদ থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে প্রযুক্তি আরও উন্নত হলে গ্রহাণুটিকে চাঁদে নিয়ে আসার কথাও ভাবছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কষ্টকল্পনা হলেও বিজ্ঞানীরা এ কথা সত্যিই ভেবেছেন। সে ক্ষেত্রে চাঁদ থেকে ধীরে ধীরে ওই সম্পদ নিয়ে আসা হবে পৃথিবীতে। তবে চাঁদ পর্যন্ত গ্রহাণুটি আসলেই টেনে আনা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে সাইকি মিশনের ওপর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।