জুমবাংলা ডেস্ক: দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল ১৭ কোটি টাকা বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে। সেকোয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়ার ‘সার্জ’ প্রোগ্রামের আওতায় এ বিদেশি বিনিয়োগ পেল বাংলাদেশের অনলাইন এডুকেশনাল প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল।
প্রথম বাংলাদেশি এড-টেক কোম্পানি হিসেবে টেন মিনিট স্কুল এ বিনিয়োগ এখন তাদের ঘরে।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই বিনিয়োগ নতুন প্রোডাক্ট ও কন্টেন্ট তৈরি, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিষ্ঠানের বিস্তারে ব্যবহৃত হবে।
প্রতিষ্ঠানটিতে প্রথমবারের মতো প্রাতিষ্ঠানিক এ বিনিয়োগ করেছে ভারতের সেকোয়া ক্যাপিটাল। এ বিনিয়োগের বিপরীতে সেকোয়া ক্যাপিটাল টেন মিনিট স্কুলের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হবে।
বিশ্বের শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির একটি ভারতের সেকোয়া ক্যাপিটাল। এত দিন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টেন মিনিট স্কুল প্রকল্পভিত্তিক স্পনসরশিপে পরিচালিত হয়ে আসছিল। আর শুরু থেকে এটির মালিকানার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির দুই উদ্যোক্তা আয়মান সাদিক ও আবদুল্লাহ আবইয়াদ।
টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক আয়মান সাদিক বলেন, বিদায়ী বছরে প্ল্যাটফর্মটিতে আগের বছরের চেয়ে ১২ গুণ বেশি ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেকোয়া ক্যাপিটালের এ বিনিয়োগ টেন মিনিট স্কুলের পণ্য, প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল এবং কার্যক্রমের বিস্তার ঘটাতে সাহায্য করবে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন বছরে টেন মিনিট স্কুলের কার্যক্রম আরও বিকশিত হবে। মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরিতে এ বিনিয়োগ ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
আয়মান সাদিক ও আবদুল্লাহ আবইয়াদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুলশিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কার্যক্রম শুরু করে ২০১৫ সালে। শুরু থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অনলাইন পড়াশোনাকে সহজ করতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। টেন মিনিট স্কুল অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির যে কোনো বিষয় অধ্যায়ভিত্তিক ভিডিও লেকচারের মাধ্যমে শিখতে পারছে। পাশাপাশি নিজেকে যাচাই করার জন্য রয়েছে কুইজ এবং অনুশীলনের ব্যবস্থা। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টেন মিনিট স্কুল অ্যাপ।
আয়মান সাদিক আরও বলেন, শুরুতে আমরা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতে এক কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলাম। ২০১৬ সালের আমাদের এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয় টেলিকম অপারেটর রবি। এ ছাড়া আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে স্পনসর নিতাম। এখন এসে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকে যুক্ত করলাম।
আয়মান সাদিক আশা করেন, আমরা নতুন বছরে এ বিনিয়োগের মাধ্যমে টেন মিনিট স্কুলের বিকাশ আরও ত্বরান্বিত করে আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে গুণগত শিক্ষা পৌঁছে দিতে পারব। এ ছাড়া মানসম্পন্ন কন্টেন্ট তৈরিতে এ বিনিয়োগ ভূমিকা রাখবে।
দেশসেরা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে তৈরি প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির যে কোনো বিষয়ের ২৫ হাজারের বেশি অধ্যায়ভিত্তিক ভিডিও লেকচার তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই লার্নিং অ্যাপ ব্যবহার করছে ৩০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি স্পোকেন ইংলিশ, পাওয়ারপয়েন্ট, ফ্রিল্যান্সিং, ফেসবুক মার্কেটিং, কোরআন শিক্ষাসহ অনেক ধরনের কোর্স থাকার ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে টেন মিনিট স্কুল।
২০২২ সালের শুরুতে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য লাইভ কোচিং ক্লাস, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য টেস্ট পেপার সলভ প্রোগ্রাম, ভর্তিপরীক্ষা ও বিসিএসের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি কোর্স, তৃতীয়-দ্বাদশ শ্রেণির ইন্টার্যাক্টিভ একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি ২৫টিরও বেশি স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স আনার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ছাড়া দক্ষ, উৎসাহী এবং পরিশ্রমী তরুণদের তাদের প্রোডাক্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, কন্টেন্ট এবং মার্কেটিং টিমে নেওয়ার জন্য খুঁজছে টেন মিনিট স্কুল।
২০২০ সালের শুরুর দিকে করোনা মহামারিতে দেশের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম যখন থমকে যায়; তখন অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা নতুন করে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। লকডাউনেও যাতে পড়াশোনা থেমে না থাকে এ চেষ্টায় নতুন নতুন কোর্স ও বই বের করে ই-লার্নিং প্রতিষ্ঠানগুলো। শুধু এ মহামারির সময় প্রায় ৯০ লাখ নতুন শিক্ষার্থী যুক্ত হয় টেন মিনিট স্কুলের সঙ্গে। ১৭,০০০ নতুন ভিডিও লেকচার যুক্ত হয় তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে। এ সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে টেন মিনিট স্কুল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।