রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৯ জুলাই অনুষ্ঠেয় মহাসমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম করতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি এই সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর এটিই হবে রাজধানীতে জামায়াতের সবচেয়ে বড় জনসমাগম। দলটির নেতারা বলছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে সারাদেশে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে চান তারা।
সমাবেশ সফল করতে ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ স্লোগানে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এই প্রচার কার্যক্রম দলীয়ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ কাজে দলের সব জেলা ও উপজেলা শাখা যুক্ত হয়েছে। এছাড়া জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরও প্রচার কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
এর আগে, গত ২৮ জুন সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। চরমোনাই পীরের সংগঠনটির ওই সমাবেশের পর জামায়াতে ইসলামীর এই সমাবেশকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সমমনা ১০টি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে বিএনপির কোনো নেতাকে সেখানে দেখা যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে—১৯ জুলাইয়ের সমাবেশে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাজনৈতিক দলের নেতাদের এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এই সমাবেশ থেকেই একটি বৃহৎ নির্বাচনী ঐক্যের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করবে জামায়াত।
দলীয় সূত্র আরও জানিয়েছে, সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কোটায় লোক আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলীয় জনশক্তির একটি পর্যায়ের প্রায় সবাইকে এই সমাবেশে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সোমবার মাঠ পরিদর্শন করেন জামায়াত নেতারা। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে এই পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসেন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
পরিদর্শনকালে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের উত্থাপিত ৭ দফা দাবি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি। তিনি দেশবাসীকে সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করতে হবে। এছাড়া এই সমাবেশ সফল করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামী ৫ আগস্টের পর কখনোই নির্বাচন পেছানো বা আগানোর কথা বলেনি। তিনি আরও বলেন, সরকার যখনই নির্বাচন দেবে, জামায়াতে ইসলামী সে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত।
তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যেন-তেন কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এছাড়া বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যারা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তারা ভোট কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স লুটসহ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে। এই কারণেই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে— আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, তৈরি করতে হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এছাড়া প্রতিটি ভোটার যেন নিরাপদে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন—সে নিশ্চয়তা দিতে হবে বলেও দাবি জানান জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।