জুমবাংলা ডেস্ক : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শিবরাত্রি ব্রত ও পূজা উৎসব নিয়ে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) পন্থীদের সাথে ইসকন ব্যতীত অন্য অংশের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
এর আগে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান সোমবার রাতে বিশেষ অবস্থা জারির ঘোষণা দেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের জমির ভোগদখল নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই দুই অংশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রশিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজা নিয়ে ইসকনপন্থী ও ইসকন ব্যতীত অন্য অংশের সংঘর্ষ হয়। সে সময়
ইসকন ভক্তদের হামলায় মন্দিরের সেবায়েত ফুলবাবু নিহত হন। সেই থেকে ওই মন্দিরে দুর্গাপূজার সময় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে। তবে শিবরাত্রি ব্রত ও পূজা উৎসব ঘিরে মন্দিরে এবারই প্রথম ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।
ইউএনও আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান বলেন, মন্দিরের জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিরোধের জেরে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে। এ বছর শিবরাত্রি ব্রত ও পূজা উৎসব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, তাই
পরে নতুন নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির আদেশ দেয়া হয়েছে। শিবরাত্রি ব্রত শেষ হওয়ার দুয়েকদিনে মধ্যে ১৪৪ ধারা তুলে নেয়ার চিন্তা রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ
ঠাকুরগাঁও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ বলেন, শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরে কোনো পক্ষই শিবরাত্রি ব্রত ও উৎসব পালন করে না। কিন্তু এবার ইসকনপন্থীরা মন্দিরে শিবরাত্রি ব্রত ও উৎসব পালনের উদ্যোগ নেন। এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা থেকে প্রশাসন সেখানে এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মন্দিরে ১৪৪ ধারা জারি করার পর থেকে সেখানে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০০ বছর আগে এলাকার জমিদার বর্ধামণি চৌধুরানী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ মৌজায় শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দির পরিচালনার জন্য তিনি ৮১ একর সম্পত্তি দান করেন।
এরপর থেকে সেবায়েতের মাধ্যমে এই মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা উদ্যাপন করে আসছিলেন। ২০০৯ সালের দিকে মন্দিরের আয়-ব্যয় নিয়ে সেবায়েত ফুলেন চন্দ্র রায়ের সাথে গ্রামবাসীর ভুল বোঝাবুঝি হয়। সেই থেকে ওই গ্রামের সনাতন
ধর্মাবলম্বীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে ওই মন্দির প্রশাসনের হেফাজতে রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।