নবম গ্রহটি সূর্য থেকে প্রায় ৪০০ সৌরজাগতিক একক দূরে। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বকে বলা হয় এক সৌরজাগতিক একক বা অ্যাস্ট্রোনমিকেল ইউনিট। অর্থাৎ নবম গ্রহটি হবে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব থেকে প্রায় ৪০০ গুণ দূরে। এখানে জানিয়ে রাখি, সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুন রয়েছে সূর্য থেকে ১৯ সৌরজাগতিক একক দূরে। মানে সূর্য থেকে নেপচুনের যে দূরত্ব, নবম গ্রহটি হবে তারচেয়েও ১৩ গুণ দূরে।
পরে অবশ্য আরেকটা গবেষণায় দেখা গেছে, প্ল্যানেট নাইনের গড় দূরত্ব হতে পারে ৫০০ বা ৫৫০ মহাজাগতিক একক। টানা ৭৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরে একটা নভোযান নির্দিষ্ট লক্ষ্যে গিয়ে পৌঁছাবে, এটা অতিরঞ্জিত মনে হতে পারে। কারণ, পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে থাকা ভয়েজার ১ প্রোবটি চলছে প্রায় ৪৬ বছর ধরে। এত দিনে তা পৌঁছেছে মাত্র ১৬৩ মহাজাগতিক একক দূরত্বে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, প্ল্যানেট নাইন খুঁজে পেলে সেখানে মানবজাতির কোনো প্রোব পৌঁছাতে ভয়েজারের চেয়েও ৩ গুণ বেশি সময় লাগবে।
তবে ভবিষ্যতে যদি আমাদের প্রযুক্তি আরও উন্নত হয়, তাহলে এ সময় হয়তো আরও কমবে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ক্যালটেক) জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইক ব্রাউন ২০১৬ সালে বলেছিলেন, সম্ভবত ২০ বছরের মধ্যে আমরা প্ল্যানেট নাইনে পৌঁছাতে পারব।
তাঁর যুক্তি ছিল, ভয়েজার ১ ঠিক সোজা পথে সৌরজগতের বাইরে যায়নি। যাওয়ার সময় শনি, বৃহস্পতি, ইউরেনাস ও নেপচুনের পাশাপাশি এদের উপগ্রহগুলো পর্যবেক্ষণ করেছে। ফলে গতি কমিয়ে চলতে হয়েছে ভয়েজার ১-কে। কিন্তু প্ল্যানেট নাইনে পৌঁছাতে সে ঝামেলা নেই। সোজা পথে নির্দিষ্ট নভোযানটি চলে যাবে গন্তব্যে। আর এর মধ্যে প্রযুক্তি যদি আরও উন্নত হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
আরেকটি সম্ভাবনার কথা বলা যায়। আমরা যদি হালকা পালযুক্ত উন্নত প্রপালশন প্রযুক্তি বানাতে পারি, যা সূর্যের আলো তথা ফোটনের ধাক্কায় চলবে—অর্থাৎ গ্যাসের বদলে ফোটন নির্গমণ করে ছুটতে পারবে, তাহলে হয়তো আরও দ্রুত পৌঁছানো যাবে নবম গ্রহে।
তবে এ সবই সম্ভব হবে যদি নবম গ্রহটি খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রহটিই যদি না পাওয়া যায়, তাহলে আর এতসব জটিল চিন্তা করে কোনো লাভ নেই। গ্রহটি খুঁজে পাওয়া গেল কি না, তা হয়তো আমাদের জীবদ্দশায়ই দেখে যেতে পারব। কিংবা হয়তো নিশ্চিতভাবে জানতে পারব, আসলে এমন কোনো গ্রহ আছে কি নেই। কিন্তু সেই গ্রহ যদি সত্যিই থাকে, সেখানে কোনো প্রোব পৌঁছেছে কি না, তা কি আমরা দেখে যেতে পারব? কে জানে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।