সোনা একটি অত্যন্ত মূল্যবান ধাতু, যা বিভিন্ন উদ্যোগের মৌলিক অংশ। স্বর্ণের দাম দিনের প্রথম অংশ হতে পারে বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা বিভিন্ন কারণে সোনার দাম স্থিতিশীলতা দেখতে চান।
স্বর্ণের দাম: ২২ ক্যারেটসহ সোনার দাম ভরি প্রতি বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ বাংলাদেশে স্বর্ণ শুধু অলংকারের জন্য নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ মাধ্যমও। স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিকভাবে পরিবর্তিত হলেও বাংলাদেশে এটি সম্পদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বর্ণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমদানি নীতি, এবং আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা সরাসরি স্বর্ণের দামের উপর প্রভাব ফেলে।
স্বর্ণের দাম: বাংলাদেশ ও ভারতের বাজার বিশ্লেষণ
বাংলাদেশ:
• ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ: ১৩,৬৫০ টাকা/গ্রাম | ১,৬৫,০০০ টাকা/ভরি
• ২২ ক্যারেট স্বর্ণ: ১২,৯৩৪ টাকা/গ্রাম | ১,৫১,৯০০ টাকা/ভরি
• ২১ ক্যারেট স্বর্ণ: ১২,৩৪৬ টাকা/গ্রাম | ১,৪৪,৯৯৫ টাকা/ভরি
• ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ: ১০,৫৮২ টাকা/গ্রাম | ১,২৪,২৮০ টাকা/ভরি
• সনাতন স্বর্ণ: ৮,৭১৪ টাকা/গ্রাম | ১,০২,৩৭৫ টাকা/ভরি
ভারত:
• ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ: ৮,৭৭১ রুপি/গ্রাম |৮৭,৭১০ রুপি/১০ গ্রাম |
• ২২ ক্যারেট স্বর্ণ: ৮,০৪০ রুপি/গ্রাম | ৮০,৪০০ রুপি/১০ গ্রাম |
• ২১ ক্যারেট স্বর্ণ: ৫,৫০০ রুপি/গ্রাম | ৫৫,০০০ রুপি/১০ গ্রাম |
• ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ: ৬,৫৭৮ রুপি/গ্রাম |৬৫,৭৮০ রুপি/১০ গ্রাম |
বাংলাদেশে সোনার দামের ওঠানামার কারণ
• আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব: বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়লে বা কমলে বাংলাদেশেও তার
প্রভাব পড়ে।
• মুদ্রাস্ফীতি: বাংলাদেশে টাকার মূল্য কমে গেলে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়।
• ডলারের বিনিময় হার: ডলার শক্তিশালী হলে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে।
• সরকারি নীতিমালা: আমদানি শুল্ক, ভ্যাট এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির উপর স্বর্ণের দাম
নির্ভরশীল।
• বিনিয়োগ ও চাহিদা: বিয়ের মৌসুম, উৎসব, এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগের কারণে স্বর্ণের
চাহিদা বেড়ে গেলে দামও বাড়ে।
বাংলাদেশে স্বর্ণ কেনার সঠিক সময়
• বাজার স্থিতিশীল থাকলে: দাম বেশি ওঠানামা না করলে বিনিয়োগ করা সুবিধাজনক।
• বিয়ের মৌসুমের আগে: সাধারণত বিয়ের মৌসুমে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়, তাই আগেই কেনা
ভালো।
• রমজান ও ঈদের আগে: এই সময়ে চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বাড়তে পারে।
• আন্তর্জাতিক বাজার কমলে: বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমলে বাংলাদেশেও তা কমার
সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশে স্বর্ণ বিনিয়োগের জনপ্রিয় পদ্ধতি
• সোনার বার ও কয়েন: ব্যাংক এবং অনুমোদিত বিক্রেতার কাছ থেকে কিনলে বিশুদ্ধতা নিশ্চিত
হয়।
• গহনা: অলংকার হিসেবে স্বর্ণের ব্যবহার বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।
• ডিজিটাল স্বর্ণ: যদিও বাংলাদেশে ডিজিটাল গোল্ড এখনো জনপ্রিয় নয়, ভবিষ্যতে এটি বড়
বিনিয়োগের মাধ্যম হতে পারে।
বাংলাদেশে সোনা কেনার নিরাপদ স্থান
• ঢাকা: গুলিস্তান, বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট
• চট্টগ্রাম: আগ্রাবাদ, রিয়াজউদ্দিন বাজার
• সিলেট: লালা বাজার, মিরাবাজার
• খুলনা: নিউ মার্কেট, শিববাড়ি
বাংলাদেশে স্বর্ণ বিক্রির সেরা উপায়
• সরকার অনুমোদিত দোকানে বিক্রি করুন: BSTI হলমার্কযুক্ত স্বর্ণ হলে বেশি দাম পাবেন।
• ব্যাংকের মাধ্যমে বিক্রি করুন: কিছু ব্যাংক স্বর্ণ কিনে থাকে যা নিরাপদ বিকল্প।
• বাজার পরিস্থিতি বুঝে বিক্রি করুন: দাম বাড়ার সময় স্বর্ণ বিক্রি করলে বেশি মুনাফা পাওয়া
সম্ভব।
পশ্চিমবঙ্গে সোনা কেনার জনপ্রিয় স্থান
• কলকাতা: বো বেন বাজার, হাতিবাগান
• দুর্গাপুর: মিশন বাজার
• শিলিগুড়ি: হংকং মার্কেট
বাংলাদেশ ও ভারতের স্বর্ণ বাজারের সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশে সোনার দাম কীভাবে নির্ধারিত হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স
অ্যাসোসিয়েশন (BAJUS) প্রতিদিন স্বর্ণের নতুন মূল্য নির্ধারণ করে। এছাড়া, ডলারের বিনিময় হার,
আমদানি শুল্ক এবং স্থানীয় চাহিদার উপর ভিত্তি করে স্বর্ণের দাম ওঠানামা করে।
প্রশ্ন ২: ভারতে স্বর্ণের দাম কীভাবে নির্ধারিত হয়?
উত্তর: ভারতে স্বর্ণের দাম মূলত ইন্ডিয়া বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (IBJA)
নির্ধারণ করে। আন্তর্জাতিক বাজার, ভারতীয় রুপির বিনিময় হার, রাজ্য কর, এবং স্থানীয় চাহিদার
ভিত্তিতে স্বর্ণের দাম পরিবর্তিত হয়।
এমাজন এফবিএ (Amazon FBA) প্রোডাক্ট রিসার্চ: সঠিক পণ্য নির্বাচন কৌশল
প্রশ্ন ৩: ২৪ ক্যারেট ও ২২ ক্যারেট স্বর্ণের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর:
• ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ: সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ স্বর্ণ (৯৯.৯৯% খাঁটি), যা অলঙ্কারে কম ব্যবহৃত হয়
কারণ এটি খুব নরম।
• ২২ ক্যারেট স্বর্ণ: ৯১.৬% বিশুদ্ধ এবং এতে ৮.৪% অন্যান্য ধাতু মেশানো থাকে যা এটিকে
গহনা তৈরির জন্য টেকসই করে তোলে।
প্রশ্ন ৪: বাংলাদেশে সোনা কেনার জন্য নিরাপদ স্থান কোথায়?
উত্তর: বাংলাদেশে স্বর্ণ কেনার জন্য ঢাকার বসুন্ধরা সিটি, গুলিস্তান, নিউ মার্কেট, চট্টগ্রামের
আগ্রাবাদ, খুলনার শিববাড়ি, এবং সিলেটের লালা বাজার অন্যতম জনপ্রিয় স্থান।
এমাজন এফবিএ (Amazon FBA) কি ড্রপশিপিং থেকে ভালো? তুলনামূলক বিশ্লেষণ
প্রশ্ন ৫: ভারতে স্বর্ণ কেনার জন্য নিরাপদ স্থান কোথায়?
উত্তর: ভারতে সোনা কেনার জন্য কলকাতার বো বেন বাজার, দিল্লির করোল বাগ, মুম্বাইয়ের ঝাভেরি
বাজার, এবং চেন্নাইয়ের টি নগর অন্যতম সেরা স্থান।
প্রশ্ন ৬: বাংলাদেশে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা কিভাবে যাচাই করা হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে BSTI (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) অনুমোদিত স্বর্ণ
হলে সেটি খাঁটি বলে বিবেচিত হয়। হলমার্কযুক্ত স্বর্ণ কিনলে বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা যায়।
প্রশ্ন ৭: ভারতে স্বর্ণের বিশুদ্ধতা কীভাবে যাচাই করা হয়?
উত্তর: ভারতে BIS (Bureau of Indian Standards) হলমার্ক থাকা স্বর্ণ সবচেয়ে বিশুদ্ধ বলে গণ্য
হয়। গহনার মধ্যে হলমার্ক নম্বর, ক্যারেট সংখ্যা, এবং BIS লোগো থাকে।
প্রশ্ন ৮: বাংলাদেশে সোনা কেনার সময় কর কত দিতে হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে স্বর্ণ কিনলে ৫% ভ্যাট প্রযোজ্য হয়, যা অলঙ্কারের মজুরির উপরও নির্ধারিত
হয়।
প্রশ্ন ৯: ভারতে স্বর্ণ কেনার সময় কর কত দিতে হয়?
উত্তর: ভারতে স্বর্ণ কেনার সময় ৩% GST (Goods and Services Tax) দিতে হয়।
প্রশ্ন ১০: স্বর্ণের দাম কেন প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিক বাজার, আমদানি শুল্ক, মুদ্রাস্ফীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি,
এবং বিনিয়োগকারীদের চাহিদার ভিত্তিতে প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়।
প্রশ্ন ১১: বাংলাদেশে স্বর্ণ বিক্রির সেরা উপায় কী?
উত্তর: বাংলাদেশে স্বর্ণ বিক্রির জন্য স্বীকৃত দোকান বা ব্যাংকের মাধ্যমে বিক্রি করা সবচেয়ে
নিরাপদ উপায়। স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার আগে বর্তমান বাজার মূল্য যাচাই করা
গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ১২: ভারতে সোনা বিক্রির সেরা উপায় কী?
উত্তর: ভারতে সোনা বিক্রির জন্য সরকার অনুমোদিত স্বর্ণ বিক্রয় কেন্দ্র বা অনলাইন গোল্ড
এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ।
প্রশ্ন ১৩: স্বর্ণ বিনিয়োগ কি লাভজনক?
উত্তর: হ্যাঁ, স্বর্ণ বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হতে পারে কারণ এটি মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে
সুরক্ষা দেয় এবং সময়ের সাথে সাথে এর দাম বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন ১৪: বাংলাদেশে স্বর্ণ বিনিয়োগের বিকল্প কী কী?
উত্তর: বাংলাদেশে সরাসরি স্বর্ণ কেনার পাশাপাশি সোনার বার, কয়েন এবং ডিজিটাল গোল্ডের মতো
বিকল্প রয়েছে।
প্রশ্ন ১৫: ভারতে স্বর্ণ বিনিয়োগের বিকল্প কী কী?
উত্তর: ভারতে স্বর্ণ বিনিয়োগের বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে সার্বভৌম স্বর্ণ বন্ড (SGB), গোল্ড
ETF, গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড, এবং ডিজিটাল গোল্ড।
প্রশ্ন ১৬: ভারতে এবং বাংলাদেশে ‘তোলা’ কত গ্রাম স্বর্ণের সমান?
উত্তর: ভারতে এবং বাংলাদেশে ১ তোলা = ১১.৬৬৪ গ্রাম স্বর্ণের সমান।
Amazon Private Label FBA: শূন্য থেকে মিলিয়ন ডলার কামানোর রোডম্যাপ
প্রশ্ন ১৭: সোনা কেনার আগে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত?
উত্তর:
• হলমার্ক চেক করুন (BSTI বা BIS সনদ)।
• বাজার দর যাচাই করুন।
• স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাই করুন।
• অতিরিক্ত চার্জ (মজুরি, ভ্যাট) সম্পর্কে জানুন।
• অনুমোদিত বিক্রেতার কাছ থেকে কিনুন।
প্রশ্ন ১৮: ডিজিটাল গোল্ড কি?
উত্তর: ডিজিটাল গোল্ড হলো একটি বিনিয়োগের বিকল্প যেখানে বিনিয়োগকারীরা অনলাইনে নির্দিষ্ট
পরিমাণ স্বর্ণ কিনতে পারেন। ভারতে এটি বেশ জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এখনো ব্যাপকভাবে চালু
হয়নি।
প্রশ্ন ১৯: বাংলাদেশ ও ভারতের সোনার বাজারে ভবিষ্যৎ প্রবণতা কেমন হতে পারে?
উত্তর: অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মার্কিন ডলারের বিনিময় হার, মুদ্রাস্ফীতি, এবং কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের নীতির উপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে স্বর্ণের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের সোনা বাজার সম্পর্কে সচেতন হওয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। স্বর্ণ কেনা, বিক্রি, বিশুদ্ধতা যাচাই, কর ব্যবস্থাপনা, এবং বিনিয়োগের বিকল্প
সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকলে এটি একটি লাভজনক বিনিয়োগ হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।