জুমবাংলা ডেস্ক: ভয়াবহ করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান শহরে আটকে পড়া ৩৬১ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমান চীনে পৌঁছেছে।
জাতীয় পতাকাবাহী বিমানের পরিচালক মোকাব্বিরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হোসেন জানান, একটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর বিমান ১৪ জন ক্রু ও চারজন চিকিৎসককে নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আজ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উহানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। এটি স্থানীয় সময় রাত সাড়ে দশটায় চীনের উহান শহরে পৌঁছায়।
তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে বিমানটি আগামীকাল ভোর রাত ২টার দিকে এখানে ফিরে আসবে বলে।’
এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন আজ বলেছিলেন, সরকার এখন উহানে আটকা পড়া ৩৬১ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ একটি বিমান সন্ধ্যা ৫ টায় চীন যাচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, এখনও পর্যন্ত আমরা জানি উহান থেকে দেশে ফিরে আসতে ইচ্ছুক ৩৬১ জন বাংলাদেশি নিবন্ধনভুক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ১৯টি পরিবারের সঙ্গে ২০টি শিশু রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আশকোনা হজ ক্যাম্পে পাঠানো হবে। সেখানে পরের ১৪ দিন রাখা হবে। তিনি বলেন, আগতরা অসুস্থ নয়, তবে আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ভাগ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চীনে অবস্থানরত যারা ‘ফিরে আসতে ইচ্ছুক’ তাদেরকে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এর আগে, চীন সরকার আমাদের বলেছিল, তারা উহান থেকে ১৪ দিনের আগে কাউকে ফেরার অনুমোতি দেবে না।কাউকে অনুমতি দেবে না, তবে গতরাতে তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা আমাদের নাগরিকদের (শুক্রবার রাতে) পাঠানোর একটি বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
চীনের অনুমোদন পাওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা বিষয়টি অবহিত করেছেন এবং তখনই তিনি বাংলাদেশী নাগরিক ফিরিয়ে আনার সুযোগটি গ্রহণ করতে বলেছেন।
মোমেন জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে প্রত্যাবর্তনকারীদের পৃথকীকরণ করতে হজ শিবিরে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রী বলেন, তারা সেখানে পর্যবেক্ষণে থাকবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। তারা ভাইরাস মুক্ত হিসেবে সনাক্ত হলে আমরা তাদেরকে ১৪ দিন পরে ছেড়ে দেবো।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল উহান শহরে যারা আটকে আছে কেবল তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। আমরা আশা করি, চীনের অন্য শহরের যে সব বাংলাদেশি আছেন তাদের ফিরিয়ে আনার দরকার নেই।
তিনি বলেন, অন্য কয়েকটি দেশের মতো চীনে বিমান চলাচল স্থগিত করতে বাংলাদেশের কোনও পরিকল্পনা নেই। উহানের সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোনো বিমান নেই … আমরা চাই চীনে বিমান পরিচালনা স্থগিত না করতে, তবে আমরা আমাদের লোকজনকে এখন চীন ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চীন থেকে আগত কাউকেই ১৪ দিনের আগে ক্যাম্প থেকে ছাড়বো না। চীন
প্রত্যাবর্তনকারীদেও দেখতে তার আত্মীয়-স্বজনদের সেখানে না যাওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি পরিচালনার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটি চিকিতৎসা প্রোটোকল প্রস্তুত করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর-এর সমন্বয়ে পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে চিকিৎসা প্রোটোকল সম্পর্কিত একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছি এবং এটি সারাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে বিতরণ করা হচ্ছে।’
এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পনেরো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বেইজিং মিশনে অবহিত করেছেন যে বাংলাদেশে এই রোগ সংক্রমণ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা ঝুঁকি এড়ানোর জন্য দেশে ফিরতে চায় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।