স্পোর্টস ডেস্ক : সবকিছু চলছিল ঠিকঠাক, কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে আচমকাই খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তাদের রক্ষণ হয়ে পড়ে এলোমেলো। ৪৩ থেকে ৫৩-এই ১০ মিনিটে তিন গোল হজম করে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে তারা। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হঠাৎ দল কেন এমন এলোমেলো হয়ে গেল, সবার আত্মবিশ্বাস নেমে গেল তলানিতে, সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা।
২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ‘আই’ গ্রুপের ম্যাচে বৃহস্পতিবার ৫-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। কুয়েতের জাবের আল-আহমাদ স্টেডিয়ামে এত বড় ব্যবধানের হার, বিশেষ করে প্রথমার্ধের শেষ দিকে এমন ছন্দপতনের কারণ খুঁজছেন কাবরেরা।
“ফলের দিক থেকে এটা আমাদের জন্য বেশ কঠিন (মেনে নেওয়া)। ম্যাচের শুরুর ৪০ মিনিট আমরা দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি, ফিলিস্তিনের মতো খুবই শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ফেস টু ফেস লড়াই করেছি; কিন্তু প্রথমার্ধে যেভাবে আমাদের খেলার মান পড়ে গিয়েছিল। আমরা জানতাম ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলার সময় কোনো এক পর্যায়ে এমন কিছু হতে পারে, কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে মান অনেক বেশি পড়ে যায় এবং আমি মনে করি, সেটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া দলের জন্য খুব কঠিন ছিল।”
“এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হঠাৎ করে আমরা আরও দুই গোল খেয়ে বসলাম, তাতে দলের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যায়। শক্তিশালী ফিলিস্তিনের বিপক্ষে আমরা স্রেফ উড়ে গেছি এবং সত্যি বলতে এটাই বাস্তবতা। এই গ্রুপ পর্বে এ ধরণের বিষয় আমাদের সঙ্গে হতে পারে। কী ঘটে গেল, সেগুলো এখন আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে। সমন্বয় করতে হবে এবং এ ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে; উন্নতি করতে হবে।”
এই প্রথম ফিলিস্তিনের বিপক্ষে কোনো ম্যাচে পাঁচ গোল হজম করল বাংলাদেশ। কাবরেরা অবশ্য স্কোরলাইন নিয়ে ভাবছেন না, তিনি খুঁজে ফিরছেন অনেক ‘কেন’-এর উত্তর।
“সত্যি বলতে, এই ম্যাচের ফল মুল বিষয় নয়, কেননা এই ফল আমাদেরকে খুব বেশি বদলে দেবে না। ৪-০, ৫-০, ৬-০ স্কোরলাইন যাই হোক, আমাদের দলের কাছে যে চাওয়া, সেটার খুব বেশি পরিবর্তন করবে না। ৪০ মিনিট যে পারফর্ম আমরা করেছি, সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার সামর্থ্য কেন আমাদের নেই, কেন আমরা ওই ভুলগুলো করেছি, যে প্রাণশক্তি নিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিলাম, সেটা হারানোর পর কেন ফিরে পেলাম না, আমাদের এগুলো বিশ্লেষণ করতে হবে। তাই আমার কাছে ৪-০, ৫-০, ৬-০ গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়।”
“দলের খেলার স্ট্যান্ডার্ড বাড়ছে, উন্নতি হচ্ছে, বিকশিত হচ্ছে, শুরুর ৪০ মিনিট আমরা যেভাবে খেলেছি, আমার মনে হয়, শক্তিশালী দলের বিপক্ষে এটাই আমাদের খেলা সেরা ৪০ মিনিট। এখন আমাদের শিখতে হবে, বিশ্লেষণ করতে হবে। উন্নতি করতে হবে, পরের ম্যাচের জন্য। আজকের ম্যাচের ফল নিয়ে বেশি ভাবার সময় আমাদের হাতে নেই।”
প্রথমার্ধেই এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন সোহেল রানা জুনিয়র। ২৭তম মিনিটে ওই গোলটি পেলে ম্যাচের গল্পটা অন্যরকম হতেও পারত। এরপর হজম করা প্রতিটি গোল যেন ডিফেন্ডারদের হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রতিচ্ছবি। তবে কারোর সমালোচনা করছেন না কাবরেরা। এই স্প্যানিশ কোচ বরং ফিরতি লেগ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।
“ছেলেরা হয়তো আরও বেশি দিতে পারত, কিন্তু বিষয়গুলো সেরকম নয়। আমি মনে করি না, প্রথমার্ধে আমরা যেটা করেছি তার জন্য নির্দিষ্ট কেউ দায়ী। আমরা একটা দল হয়ে খেলেছি এবং আমাদের সেভাবেই নিজেদের দিকে তাকাতে হবে। এখন আমাদের কেবল পরের ম্যাচের জন্য নয়, বছরের বাকি সময়ের জন্যও ভালো দল হয়ে ওঠার পথ খুঁজে বের করতে হবে।”
“এই ম্যাচেও ভালো দিক আছে। চূড়ান্ত স্কোরলাইনের কারণে হয়ত এই ভালো দিকগুলো বুঝতে পারা কঠিন। কিন্তু কিছু দিক আছে, যেগুলোর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে পরের ম্যাচে ইতিবাচক কিছু পাওয়া যায়। আবারও বলছি এখন বিশ্লেষণের সময়, ঘরের মাঠে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময়। যাতে নিজেদের দর্শকের সামনে আজকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হতে পারি আমরা।”
আগামী ২৬ মার্চ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।