জুমবাংলা ডেস্ক: একটি বটগাছ, একটি ইতিহাস। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সরাইদহ চরপাড়া গ্রামে প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমির উপর বিস্তৃত একটি বটগাছ কালের সাক্ষী হয়ে দীর্ঘ প্রায় ৪শ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে। গাছটির শাখা-প্রশাখা, ডালপালা মাটির সঙ্গে তৈরি করেছে এক অন্যরকম সম্পর্ক। শীতল ছায়া আর পাখির কলকাকলিতে মুখর।
সবুজ শ্যামল এই বটগাছের নিচে যে কেউ এসে বসলে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পথচারী ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে এর অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তাই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন উপজেলার ভূয়াগাতী বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা এই বটগাছটির পাশে। ভূয়াগাতী গ্রামের বয়োবৃদ্ধ নিরঞ্জন চন্দ্র শীল (১০০) ও সরাইদহ চরপাড়া গ্রামের লোকমান হোসেন (৮০) জানান, তারা দাদার মুখে শুনেছেন গাছটির বয়স প্রায় ৪শ বছর।
গাছটির ছড়িয়ে থাকা একেকটি শাখা-প্রশাখা দেখলেই মনে হয় পরম মমতায় বাড়িয়ে দেওয়া হাত। শিশুরা সুযোগ পেলেই বটগাছের নিচে খেলাধুলায় মেতে ওঠে। আগে বটতলায় অনেক সাধু-সন্ন্যাসী ধ্যানে মগ্ন হতেন। এখন তাদের দেখা না মিললেও হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই গাছটি দেখতে আসেন। অনেকে আবার মানত পূরণ করার জন্য আসেন।
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বটতলায় প্রতিবছর জৈষ্ঠ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার চরপাড়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। প্রতিটি বাড়িতে দেখা যায় জামাই-ঝিসহ অতিথিদের উপচেপড়া ভিড়। মেলায় হিন্দু ও মুসলিমসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। মেলাতে থাকে গ্রাম-বাঙলার ঝুড়ি বুন্দিয়া, জিলাপি, গজা, কদমা, খাজা, খুরমা, দই, ঘোলসহ বিভিন্ন রকম মিষ্টির দোকান। তাছাড়াও মেলায় থাকে নাগরদোলা, লাঠিখেলা, ছুড়িখেলাসহ বিভিন্ন খেলা। এতে মেতে ওঠেন মেলায় আগত মানুষেরা।
বটগাছটিকে নিয়ে প্রচলিত আজব সব কথাবার্তা শোনা যায়। বটগাছের পাতা বা ডালপালা জ্বালানি হিসেবে কেউ ব্যবহার করলে তার গায়ে জ্বর আসে। কথিত আছে, এ গাছের নিচে প্রস্রাব বা মলত্যাগ করলে তারা নানা রকম রোগে আক্রান্ত হন। তাই বৃক্ষটির নিচে পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে সকলেই সচেতন।
চান্দাইকোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান খান জানান, সড়ক পথসহ যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এলাকাচি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।