জুমবাংলা ডেস্ক : অভিনব কায়দায় বিভিন্ন ডায়লার অ্যাপস ব্যবহার ও কাস্টমার কেয়ার এজেন্ট সেজে কৌশলে গ্রাহকের নতুন কার্ডের সিভিভি কোড এবং মোবাইলের ওটিপি সংগ্রহের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করছে একটি অননলাইন প্রতারক চক্র। চক্রটি গত কয়েক মাসে কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা চুরি করেছে।
রবিবার (২১ মার্চ) দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার তিনজন হলেন- চক্রের প্রধান মামুন তালুকদার, তার সহযোগী রাজু ফারাজী এবং মো. মিঠু মৃধা।
ভোরে মিঠুকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে (২০ মার্চ) ভোরে চক্রের প্রধান মামুনকে কক্সবাজার থেকে এবং একই দিন সহযোগী রাজুকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (২১ মার্চ) ডিএমপির গণমাধ্যমে শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বেশ কয়েকজন গ্রাহকের প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে খোয়া যাওয়ার পর টের পায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর বিষয়টি ডিএমপির সিটিটিসি বিভাগের সাইবার ইউনিটকে জানায়। সিটিটিসির সাইবার ইউনিট বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। প্রায় এক মাস ধরে লক্ষাধিক মোবাইল নম্বর ও ডায়লার অ্যাপসের আইপি বিশ্লেষণসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতারের সময়ে তাদের কাছ থেকে ব্যাংকিং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সিও গাড়ি, ৭টি বিশেষ অ্যাপসযুক্ত মোবাইল ফোন, ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত বহু মোবাইল সিমকার্ড, একাধিক ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।’
ডিএমপির সাইবার নিরাপত্তা ইউনিট সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে এই প্রতারক চক্রটি অভিনব কায়দায় বিভিন্ন ডায়লার অ্যাপস ব্যবহার করে কয়েকটি ব্যাংকের হেড অফিসের কার্ড ডিভিশনের মোবাইল নম্বর স্পুফ করে শাখা-ম্যানেজারদের কল দিত। তাদের কাছে আগের মাসের নতুন কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম, কার্ড নম্বর এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করত। তারপর প্রতারকরা ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার এজেন্ট সেজে গ্রাহকদের কল করে বলতো। এ সময় তারা গ্রাহকদের জানাতো যে, ব্যাংকের নতুন কার্ডটি অ্যাকটিভ করা বা অন্য কিছু ফিক্স করার জন্য কল করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এরপর চক্রটি কৌশলে স্পুফ মোবাইল কলের মাধ্যমেই গ্রাহকদের কার্ডের মেয়াদ, ৩ থেকে ৪ ডিজিটের সিভিভি কোড এবং প্রয়োজন সাপেক্ষে মোবাইলের ওটিপি সংগ্রহ করতো। এরপর গ্রাহকদের কার্ড থেকে টাকা বা ডলার লন্ডনভিত্তিক ই-কমার্স এপ স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট, বিকাশ বা নগদ-এ ট্রান্সফার করত। পরবর্তী সময় এটিএম বুথ বা বিকাশ বা নগদ এজেন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতো তারা।
এভাবে দেশের একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের শতাধিক গ্রাহকদের প্রায় ৫০ লাখ টাকা চুরি গেলে কয়েকটি ব্যাংক ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।