জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ একটি সংবেদনশীল ও মৌলিক ইস্যু। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে সংগঠনটির অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজনীয়তা, স্বাধীনতার প্রশ্নে সংগঠনের আপসহীন মনোভাব এবং ৭১ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টার প্রতিবাদ।
সাদিক কায়েম: শিবিরের অবস্থান ও ৭১ প্রসঙ্গ
সাদিক কায়েম বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনো আপস করেনি।” তিনি আরও বলেন, “দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রতিটি জনশক্তি।”
তিনি অভিযোগ করেন, বারবার ১৯৭১ প্রসঙ্গ টেনে শিবিরকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এই প্রচারণার পেছনে বর্তমান “নব্য ফ্যাসিবাদী শাসন” ও ভারতীয় প্রভাব রয়েছে। তার মতে, এটি একটি বিভাজনের রাজনীতি, যা জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করতে চায়।
ছাত্র ঐক্য ও জাতীয় সংহতির আহ্বান
সাদিক কায়েম ‘জুলাইয়ের ঐক্য’-কে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐক্য এখনো বিদ্যমান। ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ব্যক্তিগত মতভেদ থাকলেও দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোর উচিত ঐক্য বজায় রাখা।”
তিনি জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “৫৪ বছর পরেও যদি জাতি মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐক্যমতে না পৌঁছাতে পারে, তাহলে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হতাশাজনক বার্তা বহন করবে।” এই বক্তব্যে জাতীয় স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাদিক কায়েমের বার্তা
সাদিক কায়েমের ভাষ্যমতে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জন্মের পর থেকে সংগঠনটি সব সময় দেশের সংকটকালে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। অতীতে অনেক আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের সদস্যরা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে যে তারা দেশের স্বার্থে আপসহীন। এই প্রেক্ষাপটে, ৭১-এর প্রসঙ্গ তুলে সংগঠনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা শুধু সময়ের অপচয় নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
জাতীয় ঐকমত্য ও ভবিষ্যতের বাংলাদেশ
জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সাদিক কায়েম বলেন, “এবারের সুযোগ যদি হাতছাড়া হয়, তাহলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।” শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেন কোনো বিভাজনের মাধ্যমে হুমকির মুখে না পড়ে, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তার আহ্বান: “আসুন, শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জুলাইয়ের ঐক্যের চেতনার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন ও ইনসাফভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।”
সংবাদ বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিকতা
এই বিবৃতিটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মতবিভেদ প্রবল। সাদিক কায়েমের বক্তব্য শুধু ইসলামী ছাত্রশিবিরের অবস্থানই নয়, বরং বৃহত্তর জাতীয় সংহতির প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে। জাতীয় রাজনীতি সম্পর্কিত অন্যান্য খবর পড়তে পারেন এখানে।
এই বক্তব্যে ভারতীয় প্রভাব ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি সমালোচনার বিষয়টি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যা সরকারের বিরোধী দল নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ধরে।
FAQs
- সাদিক কায়েম কে?
সাদিক কায়েম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি। - ৭১ নিয়ে শিবিরের অবস্থান কী?
শিবির বলেছে যে, তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সব সময় আপসহীন এবং বিভাজনের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে। - তিনি কেন ৭১ প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়েছেন?
বারবার ৭১ প্রসঙ্গ তুলে শিবিরকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নিজের এবং সংগঠনের অবস্থান পরিষ্কার করতেই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। - ছাত্র ঐক্যের বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
দেশের সংকটকালে ছাত্র ঐক্য জাতীয় ঐক্যের পথ প্রশস্ত করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। - জাতীয় ঐক্য অর্জনে তার আহ্বান কী?
সকল রাজনৈতিক মতভেদ দূরে রেখে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।