তোফাজ্জল হোসেন রুবেল : জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) চেয়ারম্যানের পদে আট মাস দায়িত্ব পালনকালে পাঁচ কাঠা করে দুটি প্লট এবং ১ হাজার ৬৬০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে উত্তরার প্লটটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এবং অপর প্লট ও ফ্ল্যাটটি জাগৃকের। জাগৃকের ফ্ল্যাটটি মোহাম্মদপুরে এবং প্লটটি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়।
খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাগৃকের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেন। চলতি বছরের ১৫ মে তাঁকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে বদলি করা হয়। সচিব পদমর্যাদার একজন সরকারি কর্মকর্তার একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া নিয়মের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ, রাজউক এলাকায় নিজের, স্ত্রী-সন্তান বা পোষ্য কারও নামে প্লট-ফ্ল্যাট থাকলে আবেদনের নিয়ম নেই। তবে তিনি বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি, বৈধভাবে কিছু সুবিধা নিয়েছেন।
জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) চেয়ারম্যানের পদে আট মাস দায়িত্ব পালনকালে পাঁচ কাঠা করে দুটি প্লট এবং ১ হাজার ৬৬০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে উত্তরার প্লটটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এবং অপর প্লট ও ফ্ল্যাটটি জাগৃকের। জাগৃকের ফ্ল্যাটটি মোহাম্মদপুরে এবং প্লটটি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়।
খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাগৃকের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেন। চলতি বছরের ১৫ মে তাঁকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে বদলি করা হয়। সচিব পদমর্যাদার একজন সরকারি কর্মকর্তার একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া নিয়মের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ, রাজউক এলাকায় নিজের, স্ত্রী-সন্তান বা পোষ্য কারও নামে প্লট-ফ্ল্যাট থাকলে আবেদনের নিয়ম নেই। তবে তিনি বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি, বৈধভাবে কিছু সুবিধা নিয়েছেন।
এই প্রতিবেদকের হাতে আসা নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জাগৃকের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেওয়ার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আসাদ অ্যাভিনিউয়ে সংস্থার বাস্তবায়নাধীন ‘গৃহায়ণ দোলনচাঁপা’ প্রকল্পে ১ হাজার ৬৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন। এ প্রকল্পে ফ্ল্যাটের মূল্য ধরা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৬ হাজার ৫৫৫ টাকা। অর্থাৎ ওই ফ্ল্যাটের জন্য তাঁকে ১ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া একটি কার পার্কিংয়ের জন্য আরও ৬ লাখ টাকা দিতে হবে।
জাগৃকের সূত্র বলেছে, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ১৫ মে বদলি হলেও নির্ধারিত সময়ে নতুন কর্মস্থল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে যোগ না দিয়ে ফ্ল্যাট বরাদ্দের জন্য কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু তাঁর আবেদন সংস্থার বরাদ্দসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় একাধিক বোর্ড সদস্য আপত্তি জানান। তাঁদের যুক্তি, বরাদ্দসংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের (পদায়ন-প্রেষণে নিয়োজিত) ন্যূনতম এক বছরের চাকরিকাল পূর্ণ হতে হবে। এরপরও তিনি শেষ কর্মদিবসে ফ্ল্যাটের বরাদ্দপত্র জারি করেন। জাগৃকে এমন নজির আর নেই।
উত্তরায় রাজউকের ৫ কাঠার প্লট: সূত্র জানায়, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান উত্তরায় রাজউকের পাঁচ কাঠার একটি প্লটও বরাদ্দ পেয়েছেন। রাজউকের ৯/২৪তম বোর্ড সভায় তাঁকে ওই প্লট বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ৫ জুন তাঁকে চিঠি দিয়ে বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজউক। পরে তিনি সরকার-নির্ধারিত টাকার প্রথম কিস্তি বাবদ ১২ লাখ টাকা চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জমা দিয়েছেন। প্লটটির জন্য তাঁকে কাঠাপ্রতি ৬ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে।
এনবিআরের ফয়সালের খুলনায় আবাসিক এলাকায় দুই বিঘার প্লটএনবিআরের ফয়সালের খুলনায় আবাসিক এলাকায় দুই বিঘার প্লট
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রাজউকের বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী প্লট বরাদ্দ গ্রহীতাকে একটি ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দিতে হয়। সেখানে লেখা থাকে, ‘আমি নিজে, স্ত্রী-সন্তান ও পোষ্য কারও নামে রাজউকের এলাকায় কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট নেই।’ অথচ রাজউকের প্লট বরাদ্দ পাওয়ার আগেই খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান মোহাম্মদপুরে জাগৃকের ১ হাজার ৬৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়েছেন। উত্তরার প্লটটির বাজারমূল্য কমপক্ষে সাড়ে সাত থেকে আট কোটি টাকা।
নলছিটিতে জাগৃকের ৫ কাঠার প্লট: খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় জাগৃকের সাইট অ্যান্ড সার্ভিস আবাসিক প্রকল্পে পাঁচ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। জাগৃকের চেয়ারম্যান থাকাকালে গত বছরের ২০ নভেম্বর তাঁর স্বাক্ষর করা এক বোর্ড সভার কার্যবিবরণীতে এ-সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। বরাদ্দের পর এই প্লটের জন্য তিনি কাঠাপ্রতি সাড়ে ৫ লাখ টাকা করে জমাও দিয়েছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশালে। সূত্র বলছে, জাগৃকের একটি প্লট বা ফ্ল্যাট পেলে সেখানে দ্বিতীয়বার আবেদন করার সুযোগ নেই। তবে সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান খোন্দকার মোস্তাফিজুরের ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জাগৃকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি চাকরিজীবনে কোনো ধরনের অন্যায় করিনি। চেয়ারম্যান থাকার সময় বৈধভাবে কিছু সুবিধা নিয়েছি। আর রাজউক থেকে একটি প্লট বরাদ্দ হয়েছে। সেখানে যদি কোনো সমস্যা মনে হয়, তাহলে তা নেব না।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।