জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের পান ব্যবসায়ী ইউনুস আলী গাজী। তাঁর মৃত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে দীর্ঘ তিন বছর পান বিক্রির টাকা সঞ্চয় করে ও স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা দান করলেন মসজিদের ছাদ নির্মাণ কাজে। ইউনুস আলী গাজীর এই মহৎ দান নিয়ে খুশি তার পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী।
জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়ার রাস্তার পাশে একটা পুকুর ছিল। সেটা এলাকাবাসীর উদ্যোগে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ভরাট করে প্রথমে টিনের চাল ও টিনের বেড়া দিয়ে মসজিদ তৈরি করেন এলাকাবাসী। পরে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় পাকা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়। কিন্তু মসজিদের ছাদ নির্মাণ করা যাচ্ছিল না।
এ খবর জানতে পেরে মৃত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে শংকরপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত কাশেম গাজীর ছেলে ইউসুস আলী গাজী এগিয়ে আসেন। তার আয়ের একাংশের টাকা সঞ্চয় করে রেখে দীর্ঘ তিন বছর পরে জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের চার হাজার স্কয়ার ফিটের পুরা ছাদ ঢালাইয়ের খরচ নগদ ৮ লাখ টাকা দান করেন তিনি। সোমবার (১১ অক্টোবর) সকালে মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে সন্ধ্যায় শেষ হয়।
বাবার ইচ্ছা পূরণে যে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করলেন দানবীর ইউনুস আলী গাজী। তার এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার সবাই। সমাজের ভালো কাজে এমনভাবে এগিয়ে আসুক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
পান বিক্রেতা ইউনুস আলী গাজী জানান, আমি পান বিক্রি করি। মাঠে কিছু জমি চাষাবাদও করে থাকি। তিন বছর ধান বিক্রির টাকা জমিয়ে ও স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা মসজিদের ছাদের জন্য অনুদান দিয়েছি। এটা আমার বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্য। এ অনুদানে আমিসহ আমার পরিবারের সবাই খুশি।
ইউনুস আলী গাজীর সহধর্মীনী হামিদা খাতুন বলেন, আমার স্বামী মসজিদের জন্য যে অনুদান দিয়েছেন এতে আমরা আনন্দিত ও খুশি। আমার স্বামী আমার শ্বশুরের মৃত্যুর পর যে নিয়ত করেছিলেন সেটা পূরণ হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। এই কাজে আমার সন্তানেরাও খুশি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী জানান, এখানে একটি পুকুর ছিল স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে মাটি ভরাট করে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের জন্য ৮ লাখ টাকা ব্যয়ভার ইউনুস আলী গাজী ও তার পরিবার গ্রহণ করেছেন। তার বাবা ও পরিবারের যারা মারা গেছেন তাদের রুহের মাগফেরাতের জন্য এই অনুদান তিনি দিয়েছেন। তার হাত দিয়েই আজ ছাদের ঢালাইয়ের কাজ উদ্বোধন করা হয়।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মিজানুর রহমান জানান, একজন সাধারণ দিনমজুর, পান বিক্রেতা ইউনুস আলী গাজী টাকা জমিয়ে ও নিজের স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে এই করোনাকালীন সময়ে ৮ লাখ টাকা দিয়ে মসজিদের ছাদ ঢালাই দিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সবাই এই মহৎ কাজে অনেক খুশি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।