আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবশেষেন্ড পোলান্ডের কাছে নত মস্তকে ক্ষমা চাইলো জার্মানি। যদিও এরই মধ্যে দীর্ঘ ৮০ বছর পেরিয়ে গেছে। প্রথম বিশ্বযু’দ্ধের সময় পোল্যান্ডে নাৎসি বর্বরতার জন্য রোববার ক্ষমা চেয়েছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভল্টার স্টেইনমিয়ার।
১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের ভিয়ালুন শহরে বো’মা মেরেছিল জার্মান বাহিনী। ওই ঘটনা স্মরণে রোববার শহরটিতে এক অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে স্টেইনমিয়ার ছিলেন।
জার্মান ও পোলিশ উভয় ভাষাতেই স্টেইনমিয়ার বলেন, ‘ভিয়ালুনে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সামনে আমি আমার মাথা অবনত করছি। আমি জার্মানির টাইরানিতে পোলিশ ভুক্তভোগীদের সামনে মাথা অবনত করছি। আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
এ সময় পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আনজেই দুদা তার পাশে ছিলেন। নাৎসি জার্মানির ওই হামলাকে ‘বর্বরতা’ অ্যাখ্যা দিয়ে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টও তার তীব্র নিন্দা জানান। দ্বিতীয় বিশ্বযু’দ্ধে নিহতদের জন্য ১ মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে ওই স্মরণানুষ্ঠান শুরু হয়।
স্টেইনমিয়ার বলেন, ‘পোল্যান্ডে জার্মানিরাই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছিল। আমরা কখনও ভুলব না। আমরা মনে রাখতে চাই এবং আমরা মনে রাখব।’ দুদা বলেন, ‘সেটি কী ধরনের যু’দ্ধ ছিল তা দেখেছে ভিয়ালুন। সেটি ছিল পুরোদস্তুর যু’দ্ধ, নিয়ম ছাড়া, ধ্বংসাত্মক একটি যু’দ্ধ।’
স্টেইনমিয়ারের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে দুদা বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট যে এ অনুষ্ঠান পোলিশ-জার্মান বন্ধুত্বের ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযু’দ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হওয়া দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ড অন্যতম। ওই যু’দ্ধে নিহত পাঁচ কোটির মধ্যে দেশটিরই ছিল প্রায় ৬০ লাখ লোক। ৮০ বছর ধরেই পোল্যান্ড জার্মানির কাছে বিশ্বযু’দ্ধের প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে। পরাজিত রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাভিয়েচকির সাম্প্রতিক অবস্থান জার্মানির সঙ্গে দেশটির উত্তেজনাও বেড়েছে।
এদিকে কমপক্ষে ৪০ জন বিশ্বনেতা বিশ্বযু’দ্ধের ভয়াবহতার ইতিহাসকে স্মরণ করে এগিয়ে এলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অনুপস্থিতি বড্ড চোখে লেগেছে। এই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় ডোরিয়ানের অজুহাতে দেখিয়ে তিনি এতে উপস্থিত হননি। তার বদলে পাঠিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সকে। পুতিনের কাছে অবশ্য আমন্ত্রণ জানায়নি পোল্যান্ড। বিশ্বযু’দ্ধের পর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আধিপত্যের ইতিহাস এবং ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়াকে দখল করে নেয়ার ঘটনায় রুশ-পোলিশ সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তাই এ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পাননি পুতিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।