বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : আজ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি বছর আগে বিস্তীর্ণ, অসীম এই মহাবিশ্বের কোনো একটি স্থানে সৃষ্ট রেডিও তরঙ্গ এসে পৌঁছেছে পৃথিবীতে। সেই তরঙ্গ আবার শনাক্ত করেছেন একদল জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী। এর আগে কখনো এত বেশি দূর থেকে আসা এত বেশি শক্তিশালী রেডিও তরঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ ধরনের রেডিও তরঙ্গকে বলা হয় ‘ফাস্ট রেডিও বার্স্ট’ (এফআরবি) বা দ্রুত রেডিও বিস্ফোরণ। বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সাধারণত ফাস্ট রেডিও বার্স্ট হলো এমন এক ধরনের রেডিও তরঙ্গ, যা মাত্র মিলিসেকেন্ড সময় পরিমাণ স্থায়ী হয় এবং এসব তরঙ্গের উৎস সহজেই খুঁজে বের করা যায় না। পৃথিবীতে প্রথম কোনো ফাস্ট রেডিও বার্স্ট ধরা পড়ে ২০০৭ সালে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ওই রেডিও তরঙ্গের নাম রাখা হয়েছে ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (এফআরবি)-২০২২০৬১০ এ। এটি মিলিসেকেন্ডেরও কম সময় স্থায়ী ছিল। কিন্তু এই তরঙ্গ যে পরিমাণ শক্তি নির্গত করেছে, তা আমাদের সূর্য একক যেকোনো তরঙ্গ যে পরিমাণ শক্তি নির্গত করে তার ৩০ বছরের সমষ্টির সমান।
সাধারণত অধিকাংশ ফাস্ট রেডিও বার্স্ট অনেক বেশি উজ্জ্বল আলোকপ্রভা সৃষ্টি করে। কিন্তু তা মিলিসেকেন্ড বা তারও কম সময় স্থায়ী হওয়ায় খুব দ্রুত মিলিয়ে যায় এবং এ কারণে এ ধরনের তরঙ্গকে পর্যবেক্ষণ করা কঠিন। রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে এসব তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করা গেলেও তা এসব তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য জানার জন্য পর্যাপ্ত সময় নয়।
অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী অস্ট্রেলিয়ান স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে পাথফাইন্ডার (এএসকেএপি) নামে একটি টেলিস্কোপের সাহায্যে এই তরঙ্গ শনাক্ত করেছেন। এই টেলিস্কোপ অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের ওয়াজারি ইয়ামাজি কাউন্টিতে অবস্থিত। এই রেডিও তরঙ্গ শনাক্ত করার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকোয়ার ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. স্টুয়ার্ট রেইডার বলেন, ‘আমরা আগেও এএসকেএপি ব্যবহার করে এমন তরঙ্গ কোথা থেকে এসেছে তা শনাক্ত করেছি।’
তবে এবার যে তরঙ্গটি শনাক্ত হয়েছে, তার উৎস এখনো জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে অনুমান করছেন, এই তরঙ্গ এমন কোনো শক্তিশালী বস্তু থেকে আগত, যা আবার কোনো একটি তারার বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ফাস্ট রেডিও বার্স্ট বা দ্রুত রেডিও বিস্ফোরণর ফলে সৃষ্ট রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে দুটি গ্যালাক্সির মধ্যকার বস্তুর ভর পরিমাপ করে মহাবিশ্বের ভর নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।