নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈধ অংশীদারিত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়ে ৮৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের দায়ে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামী হলেন নাছিম আহম্মদ খোকন (৫৫), পিতা মৃত নুর মোহাম্মদ সওদাগর। তিনি নিজেকে ড্রিম করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাকলিয়া থানাধীন ইসহাকের পুল সংলগ্ন নুর মোহাম্মদ সওদাগরের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহিম।
মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার নাছিম আহম্মদ খোকন পূর্ব পরিচয়য়ের সূত্র ধরে পার্বত্য খাগড়াছড়ির মহাজনপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে বিগত ৭ আগস্ট ২০২১ তারিখ হতে পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে আট কিস্তিতে ৮৫ লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণ করেন। এর বিপরীতে ওইদিন নাছিম আহম্মদ ও তার অপর দুই সহযোগী মোহাম্মদ আবদুল জব্বার (৪৯), পরিচালক ড্রিম করপোরেশন এবং মো. ইউনুচ, পরিচালক ড্রিম করপোরেশন, সেলিম ট্রেড সেন্টার, আদালত সড়ক, খাগড়াছড়ির প্যাডে একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন।
এতে উল্লেখ করা হয় যে, চলতি বছরের ৭ আগস্ট অথবা এর পরেরদিন চুক্তিপত্র দাতাগন চুক্তিপত্র গ্রহিতাকে তাদের জায়গাজমি সংক্রান্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ড্রিম করপোরেশনের ২৫ শতাংশ শেয়ার প্রদান করবেন এবং এই সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র হস্তান্তর করবেন। কোনো কারণে অংশীদারিত্বের কাগজপত্র দিতে অপারগ হলে পরে লভ্যাংশসহ মোট এককোটি টাকা চুক্তিপত্র গ্রহীতাকে নগদে বা পে-অর্ডারে পরিশোধ করতে বাধ্য থাকিবেন চুক্তিপত্র দাতাগণ।
দীর্ঘদিন ধরে কথায়-বার্তা ও আচার-ব্যবহারে বিশ্বাস জমিয়ে গ্রেফতার প্রতারক নাছিম আহম্মদ ও তার সহযোগীরা মামলার বাদীর কাছ থেকে ৮৫ লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণের পর তাদের আসল রূপ বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে মামলার বাদী প্রতারকদের প্রতিষ্ঠান ড্রিম করপোরেশনে অংশীদারিত্বের কাগজ চাইতে গেলে তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এক সপ্তাহ সময় নেন।
ব্যবসায়ীক মন্দা চলছে বলে অজুহাত দিয়ে ওই এক সপ্তাহের মধ্যে অংশীদারিত্বে কাগজপত্র দিতে না পারলে লভ্যাংশসহ টাকা পরিশোদের আশ্বাস দেন নাছিম আহম্মদের দুই সহযোগী। কিন্তু একসপ্তাহ পর মামলার বাদী ও পাওনাদার রফিকুল ইসলাম গত ১৪ আগস্ট ড্রিম করপোরেশনের খাগড়াছড়ি অফিসে গেলে মামলার এক নম্বর আসামী ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাছিম আহম্মদ খোকন মামলার বাদী রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এরকম টাকা ও ব্যবসার অংশীদার দাবি করলে তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেন এবং উল্টো মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন।
এ অবস্থায় পাওনাদার রফিকুল ইসলাম গত ১৬ আগস্ট খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসের ১৪ তারিখে মামলার এক নম্বর আসামী নাছিম আহম্মদ খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলে আসামীকে নগরীর বাকলিয়া ইসহাকের পুল এলাকার নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।