জুমবাংলা ডেস্ক : বিদেশে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে ৮৫০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ সংখ্যা অন্তত দেড় হাজার। প্রতারণায় হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি। টাকা ফেরত না দিয়ে, ভুক্তভোগীদের হুমকি দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার লায়ন এম কে বাশার।
বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্টের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত আল-আমিন হক অহনের করা একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সন্তানকে বিদেশে পড়ানোর স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে রিতা আক্তারের। ‘সব রেডি-ছেলের লাগেজ গুছিয়ে ফেলুন’- এমন আশ্বাসে তিনি তড়িঘড়ি করে ১০ লাখ টাকা তুলে দেন লায়ন এম কে বাশারের হাতে। স্বামী সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সবুজ আলমের জমানো টাকার সঙ্গে সুদে ঋণ নেন আরও ৫ লাখ। এখন সেই সুদের বোঝা টানছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা রিতা আক্তার বলেন, ‘একটা ছেলে, শ্বশুড়-শাশুরির ও দেবর নিয়া আমরা একটা সুখী পরিবার ছিলাম। সেই সুখটা লায়ন বাশার কেড়ে নিয়েছে আমার কাছ থেকে।’
রিতা আক্তারের মতো বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের প্রতারণার শিকার এমন কয়েকশ অভিভাবক-শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার যে টাইমটা ছিল ওইটা সেপ্টেম্বরে চলে গেছে। আবার জানুয়ারির জন্য ওরা কানাডায় দিয়েছে। ওইখানে দেওয়ার পর তারা আরও দেড় লাখ টাকা নিয়েছে। মোট ৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা নিয়েছে। আরও আনুষ্ঠানিক অন্যান্য খরচ মিলে আমার ৩ লাখ টাকা গেছে।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি যখন আসার পাওয়া টাকার খোঁজে যাই, তখন বাশারের প্রতিষ্ঠানের লোকেরা আমার ওপর হামলা চালায়।’
বিদেশে উচ্চ শিক্ষার প্রলোভন দিতে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে কয়েক ডজন প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর। এসব কাউন্সেলরই ভুয়া কাগজ তৈরি করে ফাঁদে ফেলেন শিক্ষার্থীদের।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কানাডার যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনভাইটেশন লেটার আমায় দিছে পরে দেখি ওটা ভুয়া। অথচ ওটা দেখেই ৩০ লাখ দিছি।’
ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘জোবায়ের আর নাজমুল ছিল আমার কাউন্সিলর। ওরা ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর কেউই আর ফোনকল রিসিভ করে না। এরপরে প্রায় এক দেড় মাস পরে ফোন ধরে। ফোন রিসিভ করে বলে- আপনাদের তো অফার লেটার এসেছে, ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখানোর জন্য আরও ৪ লাখ টাকা দিতে হবে ওদের।’
সম্প্রতি টাকা ফেরত দিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। তবে সেই চুক্তিও মানছেন না এম কে বাশার। উল্টো মুখ খুললে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার লায়ন এম কে বাশার বলেন, যারা আন্দোলন করে নাই, মামলা করে নাই, তাদের টাকাগুলো আমরা সবার আগে পরিশোধ করছি। সবার টাকা উঠায় দেওয়ার যে দায়িত্ব আপনারা নিচ্ছেন, সেই টাকা কি আদৌ আপনারা তুলে দিতে পারবেন, সেটা কি নিশ্চিত।’
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির গুলশান কার্যালয় গেলে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া লাপাত্তা রয়েছেন সব কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পেতে দুবার ই-মেইল করেও সংশ্লিষ্টদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের নিয়োগ দেওয়া ৬০০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।