সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৭১ লাখ ৯৩ হাজার নয়শ ৮৮ জন এবং মারা গেছে চার লাখ আট হাজার ছয়শ ২৮ জন। কিন্তু এরই মধ্যে করোনাকে বিদায় জানিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
সে দেশে এখন করোনা আক্রান্তর সংখ্যা শূন্য। নভেল করোনা জয় করে শেষ রোগীও বাড়ি ফিরেছেন সে দেশে। আনন্দে আত্মহারা কিউই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। গত ২২ মের পর থেকে সে দেশে নতুন করে হদিস মেলেনি করোনা আক্রান্ত। নিউ জিল্যান্ড তো করোনা মোকাবিলায় সফল। তার সঙ্গে সঙ্গেই আরো আটটি দেশ পেরেছে করোনাকে বিদায় জানাতে। সেগুলো হলো-
মন্টিনিগ্রো : ইউরোপের বুকে বসনিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে সীমানা ভাগ করে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মন্টিনিগ্রো। একেবারে যুদ্ধ জয়ী রাজার মতো। ১৭ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর মেলে বালকানস তীরের এই দেশ থেকে। তারপর লকডাউনের পথেই হাঁটে ৬ লাখ ২২ হাজার ৩৫৯ জনের এই দেশ। ৩২৪ জনেই আটকে যায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা। ২৪ মে নিজেদের করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে এই দেশ।
ইরিত্রিয়া : আফ্রিকার একেবারে পূর্ব দিকে ৬০ লাখ জনগোষ্ঠীর দেশ ইরিত্রিয়া। ২১ মার্চ নরওয়ে ফেরত এক ব্যক্তির দেহে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। করোনা যুদ্ধ শুরু করে ৯ জাতীয় ভাষার এই দেশ। করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ৩৯ জন। ১৫ মে করোনা মুক্তি লাভ করে এই দেশ।
পাপুয়া নিউ গিনি : ওশিয়ানিয়ার এই দেশের জনসংখ্যা ৮০ লাখ ৯০ হাজার। মার্চ মাসের ২০ তারিখ প্রথম করোনা হানার হদিশ মেলে এই দেশে। তারপর জারি হয় রাত্রিকালীন কারফিউ। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্দোনেশিয়া সীমানা। এশিয়া থেকে যাত্রী আসা একেবারে নিষিদ্ধ করে দেয় এই দেশ। মাত্র ৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন এই দেশে। গণপরিবহন ও জমায়েত বন্ধ করেই ৪ মে করোনা মুক্ত হয়েছে এই দেশ।
সিসিলি : একসময় ব্রিটেনের কাছে পরাধীন ছিল এই দেশ। ১৯৭৬ সালের ২৯ জুন স্বাধীন হয় সিসিলি। রাজধানীর নাম ভিক্টোরিয়া। ১৪ মার্চ প্রথম দু’জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে এই দেশে। একটুও সময় নষ্ট করেনি এই দেশ। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করা হয় যুদ্ধ জাহাজ। বন্ধ করা হয় চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সব যাতায়াত। ৯৭ হাজার ৯৬ জনের এই দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ১১ জন। সকলেই সুস্থ। করোনা মুক্ত এই দেশ।
হলি সি : ‘রোমান কোর্ট’ দ্বারা পরিচালিত হয় এই দেশ। করোনা ধরা পড়ার পর এই দেশে সব ধরনের পর্যটন বন্ধ করা হয়। মাত্র ১২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এই দেশে। ৬ জুন নিজেদের করোনা মুক্ত বলে দাবী করে এই দেশ।
সেইন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস : ক্যারিবিয়ান এই দেশের জনসংখ্যা ৫২ হাজার ৪৪১। এখানে প্রথম করোনা হানার খবর মেলে ২৪ মার্চ। তারপর বন্ধ করা হয় বিমানবন্দর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অনিত্যপ্রয়োজনীয় সব দোকান। জারি করা হয় কারফিউ। ফল মিলেছে হাতনাতে। মাত্র ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনা থাবায়। ১৯ মে নিজেদের করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে এই দেশ।
ফিজি : ওশিয়ানিয়ার এই আইল্যান্ডেও একসময় পরাধীন ছিল ব্রিটেনের কাছে। এই দেশে ফিজি হিন্দি ভাষার প্রচলন রয়েছে। প্রথম করোনা আক্রান্তর হদিশ মিলেছেল এই দেশে ১৯ মার্চ। তারপরই প্রধানমন্ত্রী ফ্রেঙ্ক বেইনিমারামা বন্ধ করে দেন বিমান পরিষেবা। বাইরে থেকে আগত সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয় ১৫ দিনের কোয়ারেন্টিন। ১৮ জন করোনা রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন এই দেশে। ২০ এপ্রিল নিজেদের করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে ফিজি।
পূর্ব তিমুর: এশিয়ার এই দেশের রাজধানী দিলি। এই দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত পাওয়া যায় ২১ মার্চ। কিন্তু দেশের নয় এমন মানুষ যারা চীন ভ্রমণ করেছেন সম্প্রতি, তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে। বন্ধ করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জমায়েত। অন্য দেশ থেকে আসা সকলের জন্য বাস্তবায়ন করা হয় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন। অবশেষে ১৫ মে সুস্থ হয়ে ওঠেন দেশের ২৪ তম শেষ করোনা রোগী। করোনা মুক্ত হয় পূর্ব তিমুর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।