জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, সারা দেশে গত ৯ বছরে এক লাখ ৯০ হাজার ১৬৭টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে এক হাজার ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন তিন হাজার ৬০৬ জন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ হচ্ছে অনুমোদনহীন অবৈধ ভবন, অবৈধভাবে ভূমি ব্যবহার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তদারকির অভাব। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া চৌধুরী হলে ‘ভবন বিপজ্জনকতায় আচ্ছন্ন নগরী: প্রেক্ষিতে করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ তথ্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এবং বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলা)।
ইকবাল হাবিব বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে নগরায়নের প্রবণতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-১১ অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, অভিঘাতসহনশীল এবং টেকসই নগর ও জনবসতি গড়ে তোলার কথা বলেছে। কিন্তু এখনো আমরা একটি নিরাপদ এবং অভিঘাত সহনশীল নগরী গড়ে তুলতে পারিনি। নগরে ঘটিত অগ্নিদুর্যোগ আজ বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। অগ্নিদুর্যোগ প্রতিরোধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সামগ্রিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পাওয়া সঙ্গে এই অর্থনীতি পরিচালনার জন্য যে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে ওঠা উচিত সেটি এখনো তৈরি হয়নি। এটিই হলো বাস্তবতা। আমাদের অর্থনীতির বড় অংশই অনানুষ্ঠানিক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাপার সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান, অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ১১টি দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সরকারি ছয়টি মন্ত্রণালয় বা সংস্থার সমন্বয়ে ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠনপূর্বক নগরীতে অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং তার দ্রুত যথাযথকরণের উদ্যোগ গ্রহণ।
জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-এর অনুসৃত নীতি অনুযায়ী ‘বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিআরএ)’ প্রতিষ্ঠা করে দেশের সব ভবন নিরাপদ করার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর সিভিল ডিফেন্স অংশকে শক্তিশালী করার উদ্যোগে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলা পর্যন্ত প্রশিক্ষিত জনগণ তৈরির কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
সরকারের তৈরিকৃত ‘স্ট্যান্ডিং অর্ডার ফর ডিজাস্টার’ অনুযায়ী কোনো দুর্যোগ সংঘটিত হলে তা মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব প্রদান করার বিধানটি পর্যালোচনাপূর্বক বাস্তবোচিত ও যথাযথকরণের উদ্যোগ গ্রহণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।